জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণে পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পিবিপ্রবি) আয়োজন করা হয় এক ব্যতিক্রমধর্মী অনুষ্ঠান। বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় এই জুলাই স্মরণ ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনী।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী জুলাই যোদ্ধা এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনে আহত ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। তারা স্মৃতিচারণের মাধ্যমে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ভয়াবহতা ও আত্মত্যাগ তুলে ধরেন। পরে আন্দোলনের উপর নির্মিত একটি বিশেষ প্রামাণ্যচিত্র ও চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন পিবিপ্রবির মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম। তিনি গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন আন্দোলনে প্রাণ হারানো শহীদদের এবং আহতদের প্রতি শুভকামনা জানান। তিনি বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল ৩৬ দিনের দীর্ঘ এক ত্যাগ ও সংগ্রামের গল্প। এই আন্দোলনের ভয়াবহতাকে কখনও ভুলে যাওয়া যাবে না।”
উপাচার্য আরও জানান, “আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকার দলীয় সন্ত্রাসীদের গুলিতে রংপুরের আবু সাঈদের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে এই আন্দোলনের রক্তাক্ত অধ্যায় শুরু হয়। এরপর ১৪০০-এর বেশি মানুষ প্রাণ হারান, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুও ছিল। এমনকি বাসার ছাদে কিংবা জানালার পাশে দাঁড়ানো মানুষও রক্ষা পাননি হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া গুলির হাত থেকে। স্বাধীন দেশে এমন ঘটনা অকল্পনীয়।”
অনুষ্ঠানে আন্দোলনে আহতদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন—চোখ হারানো পদ্মা সরকারি কলেজের ছাত্র মো. ছাকিন আহমেদ, পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের ফাহাদ সিকাদার, এবং পিবিপ্রবির শিক্ষার্থী নাফিস আহনাফ, রিয়াজুস শামস ও মো. রিফাত হোসেন। তারা আন্দোলনের সময়কার ভয়াবহ পরিস্থিতি এবং আহত হওয়ার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
তারা আন্দোলনে হামলার জন্য দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন এবং দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ রাখার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পিরোজপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ইসরাত জাহান, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. আকতার হোসেন, সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ পান্না লাল রায়, মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ শেখ রফিকুল ইসলাম, জেলা তথ্য কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ-আল-মাসুদসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।