বাংলা ভাষার ওপর ‘ভাষা-সন্ত্রাস’ চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে প্রয়োজনে আবার ভাষা আন্দোলনের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) কলকাতার ধনধান্য প্রেক্ষাগৃহে বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা উত্তমকুমারের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মমতা এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “মহানায়ক উত্তমকুমার আমাদের সকলের প্রাণের মানুষ। তিনি শুধু বাংলার নয়—তিনি পুরো জাতির, সংস্কৃতির গর্ব।”
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ভাষা, সভ্যতা ও সংস্কৃতি—এই তিনটি একটি জাতির মেরুদণ্ড। আমরা সবাই আমাদের মাতৃভাষায় কথা বলেই বড় হই। অথচ এখন দেখা যাচ্ছে, যারা বাংলা ভাষায় কথা বলেন, তাঁদের নিপীড়নের শিকার হতে হচ্ছে। এই অবস্থা আর চলতে পারে না। এখন সমাজকে জাগাতে আবার নতুন করে ভাষা আন্দোলনের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।”
তিনি আরও জানান, বিশ্বের ভাষাগুলোর মধ্যে বাংলা পঞ্চম স্থানে এবং এশিয়ায় দ্বিতীয়। প্রায় ৩০ কোটি মানুষ এই ভাষায় কথা বলেন। অথচ আজ বাংলা ভাষায় কথা বলার কারণে কাউকে কারাগারে যেতে হচ্ছে কিংবা দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হচ্ছে—এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মমতা বাংলা চলচ্চিত্র ও সংগীতশিল্পীদের পাশে থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “বাংলা ভাষাকে কেউ যেন অবহেলা না করে। আমরা অন্য ভাষাকে অসম্মান করতে বলছি না, তবে যারা বাংলায় কাজ করেন, তাঁদের সম্মান দিতে হবে।”
তিনি দাবি করেন, বাংলায় ধারাবাহিক উন্নয়নে ভীত হয়েই কেন্দ্রীয় সরকার বাংলা ভাষা ও পশ্চিমবঙ্গকে বঞ্চিত করছে। মমতা বলেন, “এই বাংলা রবীন্দ্রনাথ, বঙ্কিমচন্দ্র, নজরুলের জন্মভূমি। এখান থেকেই ভারতের জাতীয় সংগীতের জন্ম। তাহলে আজ বাংলা ভাষার ওপর এমন আচরণ কেন?”
সতর্কবার্তায় তিনি বলেন, “বাংলার মাটি কোনো দুর্বৃত্তের হতে দেওয়া যাবে না। কেউ যদি শুধু বাংলা ভাষায় কথা বলার কারণে গ্রেপ্তার হন, তবে সেই লড়াই হবে দিল্লিতে গিয়ে। প্রয়োজনে আবার ভাষা আন্দোলন হবে।”