থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের উপকণ্ঠে অবস্থিত ওয়াট র্যাট প্রাখং থাম বৌদ্ধ মন্দিরে ঘটেছে অবিশ্বাস্য এক ঘটনা। দাহের প্রস্তুতি চলাকালীন কফিনের ভেতর থেকে শব্দ পেয়ে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ৬৫ বছর বয়সী এক নারীকে। পরিবার তাকে মৃত মনে করে মন্দিরে দাহের জন্য নিয়ে এসেছিল। কিন্তু ঠিক দাহের আগ মুহূর্তেই কফিনের ভেতর জীবনের স্পন্দন ধরা পড়ে।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মন্দিরের মহাব্যবস্থাপক পাইরাত সুদথুপ জানান, কফিন থেকে প্রথমে মৃদু ধাক্কার শব্দ শুনে তিনি চমকে ওঠেন। কফিন খুলে দেখা যায়, নারীটি হালকা চেতনায় চোখ খুলছেন এবং কফিনের দেয়ালে আঘাত করছেন। সুদথুপ বলেন, “তিনি সম্ভবত বেশ কিছুক্ষণ ধরেই ধাক্কা দিচ্ছিলেন।”
এর আগে স্থানীয় কর্মকর্তারা ওই নারীর ভাইকে জানান যে তার বোন মারা গেছেন। কিন্তু মন্দিরে দাহের প্রস্তুতির সময় ভাইয়ের কাছে কোনো বৈধ মৃত্যু সনদ পাওয়া যায়নি। মন্দিরের ব্যবস্থাপক যখন তাকে মৃত্যু সনদ সংগ্রহের প্রক্রিয়া বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন, তখনই কর্মীরা আবার কফিন থেকে শব্দ শুনতে পান। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি নিশ্চিত করতে কফিন খোলা হলে দেখা যায় নারীটি জীবিত।
পরিস্থিতি বুঝেই মঠপতি (বৌদ্ধ মন্দিরের প্রধান) তাকে দ্রুত হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশ দেন। চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে জানান, তিনি গুরুতর হাইপোগ্লাইসেমিয়ায় (রক্তে শর্করার মাত্রা মারাত্মকভাবে কমে যাওয়া) ভুগছিলেন। তবে তিনি শ্বাসকষ্ট বা হৃদরোগে আক্রান্ত হননি। সঠিক সময়ে উদ্ধার হওয়ায় বড় ধরনের বিপদ এড়ানো গেছে।
ওই নারীর ভাই জানান, তার বোন দুই বছর ধরে শয্যাশায়ী ছিলেন। স্বাস্থ্য অবনতির কারণে পরিবারের সদস্যরা মনে করেছিলেন, তিনি মারা গেছেন। মন্দিরের কর্মকর্তার ধারণা, তার শ্বাস-প্রশ্বাস সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সবাই তাকে মৃত ভেবেছিল।
পরিবারটি থাইল্যান্ডের ফিটসানুলোক প্রদেশ থেকে ব্যাংককের উদ্দেশে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছিল দাহ অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার জন্য। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ঘটনার মোড় ঘুরে যায় এবং অলৌকিকভাবে প্রাণে ফিরে আসেন ওই নারী।