পিরোজপুর-১ আসনের জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী, শহীদ আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পুত্র জননেতা মাসুদ সাঈদী বলেছেন, তাঁর পিতা এমপি থাকাকালে উন্নয়নের কাজ শুরু করলেও আওয়ামী শাসনামলে তা বাধাগ্রস্ত হয়েছিল। তিনি যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে পিতার অসমাপ্ত উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণ করতে চান। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টায় সদর উপজেলার কলাখালী হোসাইনিয়া দাখিল মাদ্রাসা ও ঈদগাঁহ ময়দানে জামায়াতে ইসলামীর আয়োজিত সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “আওয়ামী রোশনলে পড়ে আমার পিতার উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড মুখ থুবড়ে পড়ে যায়। আমি আল্লামা সাঈদীর উত্তরসূরী হিসেবে তাঁর অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে চাই। মহান আল্লাহ আমাকে আপনাদের খাদেম হিসেবে কবুল করলে পিরোজপুর-১ আসনকে উন্নয়নের মডেল হিসেবে গড়ে তুলব।”
মাসুদ সাঈদী জানান, গত এক বছরে ক্ষমতায় না থেকেও বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগের মাধ্যমে তিনি আসনে উল্লেখযোগ্য অর্থ বরাদ্দ আদায় করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে—
জিয়ানগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় রূপান্তর (৭.৫ কোটি টাকা)
জিয়ানগরে টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ (৩২ কোটি টাকা)
চারতলা ডাকবাংলো নির্মাণ (১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা)
পিরোজপুর পৌরসভার উন্নয়ন ও সংস্কার কাজ (৩৫০ কোটি টাকা)
সুপেয় পানির ছয়টি ওয়াটার সাপ্লাই পাওয়ার প্লান্ট (১৮ কোটি টাকা)
নাজিরপুর হাসপাতাল সংস্কার (১০ লাখ টাকা)
নাজিরপুর থানা সংস্কার (৬ লাখ টাকা)
গোপালগঞ্জ-জিয়ানগর সন্ন্যাসী ফেরিঘাট পর্যন্ত চার লেন রাস্তা নির্মাণের বরাদ্দ।
এ সময় তিনি অতীতের উদাহরণ টেনে বলেন, “১৯৭১ সালের পর থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ক্ষমতাসীন অধিকাংশ দলের নেতারা দুর্নীতি করে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। অথচ জামায়াতের এমপি-মন্ত্রী কেউ দুর্নীতিতে জড়াননি।” তিনি আরও যোগ করেন, “আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার হয়, কটাক্ষ হয়, কিন্তু আমরা ন্যায়ের পথে অটল থাকব।”
নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে তিনি বলেন, “স্বাধীনতার পর থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত সব সরকারই মাত্র ৩০-৩৫ ভাগ ভোট নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। বাকি ৬৫ ভাগ ভোটারের মতামত উপেক্ষিত হয়েছে। তাই বর্তমান প্রথা বাতিল করে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চালু করা জরুরি।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন ৪নং কলাখালী ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি মো. আরিফ মিয়া এবং সঞ্চালনা করেন ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল হাকিম শেখ। প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা জামায়াতের সভাপতি অধ্যক্ষ তাফাজ্জল হোসাইন ফরিদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক শেখ, সদর উপজেলা আমির মাওলানা মো. সিদ্দিকুর রহমান, ও পেশাজীবী বিভাগের সেক্রেটারি মাসুম সর্দারসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশের আগে মাসুদ সাঈদী সদর উপজেলার গণকপাড়া, সিকদার মল্লিক, পাঁচপাড়া ও দক্ষিণ গাবতলীর বিভিন্ন স্কুল, মাদ্রাসা, বাজার ও মসজিদে গণসংযোগ করেন।