মায়ানমারের পূর্বাঞ্চলীয় কারেন রাজ্যে চলমান সংঘাতে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে। কারেন ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (কেএনএলএ) শনিবার (১৩ জুলাই) গভীর রাতে জান্তা-নিয়ন্ত্রিত একটি সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে তা দখলে নেয়। এরপর ১০০ জনেরও বেশি মিয়ানমার সেনা ও কয়েক শত বেসামরিক মানুষ পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে পাশ্ববর্তী দেশ থাইল্যান্ডে।
থাইল্যান্ডের সেনাবাহিনী নিশ্চিত করেছে যে, প্রায় ১০০ জন মিয়ানমার সেনা সীমান্ত অতিক্রম করে থাই ভূখণ্ডে প্রবেশ করে। আন্তর্জাতিক প্রোটোকল অনুসারে তাদের নিরস্ত্র করে চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হয়েছে। থাই সেনাবাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, পরিস্থিতি সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
এছাড়াও থাই কর্মকর্তারা জানান, সংঘর্ষের ফলে ৪০০ জনের বেশি সাধারণ মানুষ সীমান্ত পার হয়ে থাইল্যান্ডে প্রবেশ করেছে। তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং মানবিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
এই হামলার ফলে মায়ানমার-থাইল্যান্ড সীমান্তে উত্তেজনা আরও বাড়ছে। এর আগেও, গত মে মাসে বিদ্রোহীদের হামলার পর ৬২ জন মিয়ানমার সেনা একইভাবে থাইল্যান্ডে পালিয়ে গিয়েছিল।
অন্যদিকে মিয়ানমারের সাগাইং অঞ্চলে জান্তা বাহিনীর বিমান হামলায় একটি বৌদ্ধ মঠে কমপক্ষে ৩০ জন বেসামরিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে। এই হত্যাকাণ্ড চলমান মানবিক সংকটকে আরও গভীর করেছে।
উল্লেখ্য, কেএনএলএ ১৯৪৯ সাল থেকে কারেন জাতিগোষ্ঠীর আত্মনিয়ন্ত্রণ ও অধিকারের দাবিতে সশস্ত্র সংগ্রাম চালিয়ে আসছে। এটি মিয়ানমারের অন্যতম বৃহৎ জাতিগত সশস্ত্র সংগঠন এবং মূলত দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের সংঘাতপ্রবণ কারেন রাজ্যে সক্রিয়।
এই পরিস্থিতি আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও মানবিক সহায়তা কাঠামোর ওপর নতুন করে চাপ সৃষ্টি করেছে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।