নোয়াখালীর সেনবাগ ও সুবর্ণচর উপজেলায় আকস্মিক টর্নেডোর আঘাতে অন্তত চারটি গ্রাম ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মাত্র ২ থেকে ৩ মিনিট স্থায়ী এই ঝড়েই অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি ও একটি মসজিদ বিধ্বস্ত হয়েছে। উপড়ে গেছে শত শত গাছপালা, এবং বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সকালে এই আকস্মিক টর্নেডোটি সেনবাগ উপজেলার নবীপুর ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর, দেবীসিংপুর, গোপালপুর ও সুবর্ণচর উপজেলার পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের হাবিবিয়া গ্রামে আঘাত হানে। ঘণ্টায় প্রায় ৭০-৮০ কিলোমিটার বেগে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড়টি ছিল খুবই দ্রুতগামী ও ধ্বংসাত্মক। ভারী বৃষ্টিপাত পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তোলে।
নবীপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আমিন উল্লা বলেন, "দুই-তিন মিনিটের মধ্যে বিষ্ণুপুরে ৮টি, দেবীসিংপুরে ৭টি, গোপালপুরে ৬টি ঘর সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে। আরও ৩০টির বেশি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত। বিদ্যুৎ লাইন ছিঁড়ে যাওয়ায় পুরো এলাকা অন্ধকারে।" টর্নেডোতে বহু গাছপালা উপড়ে পড়ে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ঘরের চাল উড়ে গেছে, অনেকে খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাচ্ছেন।
সুবর্ণচরের বাসিন্দা নুর নবী বলেন, “এমন ঝড় জীবনে দেখিনি। মুহূর্তেই আমার ঘরের ওপর বিশাল গাছ পড়ে যায়। কোনোমতে প্রাণ নিয়ে বের হয়েছি।”
আরেক বাসিন্দা বলেন, “ক্ষতিগ্রস্ত সবাই কৃষক ও দিনমজুর। গাছপালা ধ্বংস হয়ে তাদের চরম ক্ষতি হয়েছে। পরিবার নিয়ে এখন কেউ কেউ খোলা মাঠে আছে।”
সেনবাগ ইউএনও মো. মহিউদ্দিন ও সুবর্ণচরের ইউএনও রাবেয়া আফসার সায়মা জানান, “মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে স্থানীয়ভাবে এই ধরনের টর্নেডো সৃষ্টি হতে পারে। ঘটনাস্থলে লোক পাঠানো হয়েছে, আমরাও সরেজমিনে গিয়েছি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে সহায়তা দেওয়া হবে।”
নোয়াখালীর এই আকস্মিক টর্নেডো আবারো প্রমাণ করল, গ্রামীণ অঞ্চলের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কতটা দুর্বল। কয়েক মিনিটের ঝড়ই লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে শত শত পরিবারের জীবন। দ্রুত পুনর্বাসন এবং আর্থিক সহায়তা এখন সময়ের দাবি।