ভারতের বিহার রাজ্যের রাজধানী পাটনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (PMCH) চিকিৎসায় বিলম্বের অভিযোগে ধর্ষণের শিকার ১০ বছর বয়সী এক দলিত শিশুর মৃত্যু দেশজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৬ মে, যখন মেয়েটি তার খালার বাড়ির কাছে ধর্ষণের শিকার হয়। এরপর হাসপাতালে ভর্তির জন্য তাকে অ্যাম্বুলেন্সে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয় বলে অভিযোগ করেছে পরিবার।
শিশুটিকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও পরে অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে পাটনার বাইরে একটি হাসপাতালে এবং সেখান থেকে পিএমসিএইচ-এ স্থানান্তর করা হয়। পরিবারের দাবি, সেখানে প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে তাকে ভর্তি না করে অ্যাম্বুলেন্সে রাখা হয়। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং দাবি করেছে, ভর্তির সময় কোনও বিলম্ব হয়নি।
এই ঘটনার পর বিরোধী দলগুলো বিহার সরকারের অব্যবস্থাপনা ও স্বাস্থ্যসেবার দুর্বলতার জন্য কঠোর সমালোচনা করেছে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী শিশুটির মৃত্যুকে "লজ্জাজনক" বলে উল্লেখ করে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। রাষ্ট্রীয় জনতা দল (RJD) টুইট করে জানিয়েছে, "শিশুটি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার অপেক্ষায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাইরে পড়ে ছিল। হাসপাতালের নামে ভবন নির্মাণের কি লাভ যদি সেবার মান না থাকে?" বিজেপি মুখপাত্র অনামিকা সিং প্যাটেল শিশুটির মৃত্যু "দুর্ভাগ্যজনক" বলে মন্তব্য করলেও সরকার ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বিহারের সরকারি হাসপাতালের মাত্র অর্ধেক ভেন্টিলেটর কাজ করে। পাটনা শহরে প্রতি ১১,৫৪১ জন মানুষের জন্য মাত্র একজন সরকারি ডাক্তার রয়েছে। গ্রামাঞ্চলে এই অনুপাত আরও ভয়াবহ।
ঘটনার গুরুত্ব অনুধাবন করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও জাতীয় মহিলা কমিশন এই ঘটনার তদন্ত ও জবাবদিহির দাবি জানিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০২৫ সালের বিহার রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই ঘটনা রাজ্য সরকারের ওপর রাজনৈতিক চাপ তৈরি করতে পারে।