প্রবাসী বাংলাদেশিদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে একটি বিশেষ হাসপাতাল নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল।
শনিবার (২ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে রেমিট্যান্স যোদ্ধা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, “জুলাই আন্দোলনে যারা প্রবাস থেকে জীবন বাজি রেখে সমর্থন দিয়েছিলেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতেই সরকার কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। প্রবাসীদের জন্য একটি আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণের কাজ প্রক্রিয়াধীন।”
২০২৩ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) রাস্তায় বিক্ষোভ করেন শতাধিক বাংলাদেশি প্রবাসী। দুবাই, শারজাহ ও আজমানে বিক্ষোভের সময় আমিরাত পুলিশ ৫৭ জনকে আটক করে।
পরে দেশটির আদালত তিনজনকে যাবজ্জীবন, একজনকে ১১ বছর এবং বাকি ৫৩ জনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেয়। এর জেরে আমিরাত সরকার অনির্দিষ্টকালের জন্য বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা সুবিধা স্থগিত করে দেয়।
২০২৩ সালের আগস্টে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আমিরাত সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। এরপর দেশটির প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান দণ্ডপ্রাপ্ত ৫৭ জন বাংলাদেশিকে ক্ষমা করেন। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাঁদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে। জুলাই ২০২৪ থেকে জুন ২০২৫ পর্যন্ত দেশে এসেছে ৩০,২২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আগের অর্থবছরের তুলনায় এটি ২৬.৮০% বেশি।
বাংলাদেশ ২০২৪ সালে রেমিট্যান্স আয়ের দিক দিয়ে বিশ্বে সপ্তম অবস্থানে ছিল। সরকার মনে করে, দেশের গণতন্ত্র রক্ষায় শহীদ ও আহত ভাইদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রবাসীরা আরও বেশি রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন।
প্রবাসীদের রেমিট্যান্স এবং দেশের রাজনৈতিক সংকটে তাঁদের ভূমিকার স্বীকৃতি দিতে হাসপাতাল নির্মাণের মতো উদ্যোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই হাসপাতাল শুধু চিকিৎসা সেবাই নয়, বরং প্রবাসীদের প্রতি জাতির সম্মান প্রদর্শনের প্রতীক হয়ে উঠবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।