বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমানে ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছেন তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। এই সফর মূলত পারিবারিক হলেও রাজনৈতিক আলোচনা হয়েছে কি না, তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে।
ভারতের নিরাপত্তা সংস্থা ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভারতে থাকা একাধিক শীর্ষ নেতার সূত্রে জানা গেছে, ৬ জুন শুক্রবার জয় ভারতে পৌঁছান, এবং পরদিন ঈদুল আজহা উপলক্ষে মায়ের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করেন। এই সফর যতটা না রাজনৈতিক, তার চেয়েও বেশি পারিবারিক, বলেই দাবি করছেন নেতারা।
সূত্রমতে, বাংলাদেশ সরকারের বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক প্রশাসন জয়ের পাসপোর্ট বাতিল করে দেয়ার পর, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন কার্ড ও পরে পাসপোর্ট অর্জন করেন। এর কিছুদিনের মধ্যেই তার ভারত সফরের পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়।
ভারতের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলি নিশ্চিত করেছে, দিল্লি বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর জয়কে উচ্চপর্যায়ের নিরাপত্তায় শেখ হাসিনার গোপন ঠিকানায় পৌঁছে দেওয়া হয়।
সেখানে শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানাও আছেন বলে নিশ্চিত করেছে আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ সূত্র।
শেখ হাসিনার কন্যা ও WHO-র দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় অঞ্চলের পরিচালক সায়মা ওয়াজেদ পুতুল দিল্লিতে থাকলেও, ভাইয়ের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয়েছে কি না, তা কেউ নিশ্চিত করতে পারেনি।
আওয়ামী লীগের ভারতে থাকা নেতারা জানান, জয় ও হাসিনার মধ্যে কিছু রানৈতিক আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও, মূলত এটি ঈদ ও পারিবারিক পুনর্মিলনের সময়।
এক নেতা বলেন— "গত কয়েকদিন তারা একসঙ্গে ছিলেন। নিশ্চয় কিছু রাজনৈতিক আলাপ হয়েছে, তবে এ সফর প্রধানত পারিবারিক।"
প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল, জয় কলকাতায় কিছু প্রবাসী আওয়ামী নেতা ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন। কিন্তু ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলি জানিয়েছে, এবারের সফরে তার কলকাতায় যাওয়ার পরিকল্পনা নেই।
আওয়ামী লীগের নেতাদের মতে, জয় দীর্ঘ সময় ভারতে থাকার পরিকল্পনাও করছেন না, খুব শিগগিরই তিনি ভারত ছাড়বেন।
২০২৪ সালের আগস্টে ঢাকায় গণ-অভ্যুত্থানের সময় শেখ হাসিনা দিল্লিতে পালিয়ে আসেন। প্রথমদিকে তাকে গাজিয়াবাদের হিন্ডন বিমানঘাঁটিতে রাখা হলেও পরবর্তীতে গোপন একটি ঠিকানায় সরিয়ে নেওয়া হয়।
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, তার মুভমেন্ট যতটা সম্ভব সীমিত রাখা হয়েছে, যদিও তিনি পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন নন।
সজীব ওয়াজেদ জয়ের ভারত সফর আপাতদৃষ্টিতে পারিবারিক হলেও, রাজনৈতিক অর্থবহ কিছু আলোচনা হয়েছে কি না, সে নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চলছে নানা জল্পনা। শেখ হাসিনার পরবর্তী পরিকল্পনা এবং আওয়ামী লীগের ভবিষ্যত রাজনৈতিক পুনর্গঠন নিয়ে সম্ভাব্য আলোচনা নিয়ে সবার আগ্রহ তুঙ্গে।