মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ভয়াবহ সংঘর্ষ, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে দায়িত্ব পালনরত এক পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১০ জন টেটাবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন। ঘটনার পর এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে লতুব্দী ইউনিয়নের কংশপুরা গ্রামে এই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কংশপুরা গ্রামের খলিলুর রহমানের সঙ্গে পূর্ব রামকৃষ্ণদী গ্রামের আহসান দেওয়ান মো. জহিরের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে হাউজিং প্রকল্প ও মাটি কাটার ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধ চলছিল। এই বিরোধ থেকেই শুক্রবার সকালে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
সকালেই জহির গ্রুপের লোকজন প্রতিপক্ষের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় বলে অভিযোগ ওঠে। এ সময় তারা কয়েকটি বাড়িঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় এবং বসতঘরে অগ্নিসংযোগ করে। সংঘর্ষ চলাকালে টেটা, লাঠি ও ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করা হয়।
একপর্যায়ে হামলাকারীরা রামকৃষ্ণদী গ্রামের বাদশা মিয়ার বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর, লুটপাট ও আগুন ধরিয়ে দেয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
খবর পেয়ে সিরাজদিখান থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে হামলাকারীদের টেটার আঘাতে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাফিজুর রহমানসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
খলিলুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, “জহিরের মাটি কাটার কাজে বাধা দেওয়ায় সে আজ লোকবল নিয়ে আমার বাড়িতে হামলা চালায়। তারা স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করেছে। আমার সাতজন সমর্থক টেটাবিদ্ধ হয়েছে।”
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মো. জহির বলেন, “আমার সঙ্গে তাদের বিরোধ অনেক পুরোনো। আজকের সংঘর্ষে আমি জড়িত নই। কংশপুরা গ্রামের খলিল ও দেওয়ানবাড়ির লোকজনের মধ্যে এই ঘটনা ঘটেছে।”
লতুব্দী ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. শামসুদ্দীন খোকন বলেন, ড্রেজার মেশিন দিয়ে জমি ভরাটকে কেন্দ্র করে কয়েকদিন ধরেই দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। আজ সেই উত্তেজনা সংঘর্ষে রূপ নেয়।
সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ হান্নান জানান, ঘটনার পর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।