সীমান্ত অতিক্রম করে উত্তর কোরিয়ার ভেতরে ড্রোন উড়িয়ে প্রচারণামূলক লিফলেট ছড়ানোর অভিযোগে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে ঝড় বয়ে যাচ্ছে। এ ঘটনায় উত্তর কোরিয়ার কাছে ক্ষমা চাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ং। তিনি মনে করেন, পূর্ববর্তী সরকারের নেয়া এই পদক্ষেপ দুই দেশের সম্পর্ককে আরও উত্তেজনায় ঠেলে দিতে পারে।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সিউলে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট মিয়ং জানান, “আমার মনে হয় ক্ষমা চাওয়া উচিত। তবে প্রকাশ্যে তা বলা নিয়ে দ্বিধায় আছি। কারণ এমন বক্তব্যকে রাজনৈতিকভাবে ভিন্নধর্মী আক্রমণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে।”
তিনি জানান, গত মাসে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইয়োলের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী, ইউনই সীমান্ত পেরিয়ে ‘প্রচারপত্র বহনকারী’ ড্রোন উড়ানোর নির্দেশ দেন। রাজনৈতিক সমর্থন বাড়াতে এবং উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে উত্তেজনা উসকে দিতেই এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল বলে তদন্তে উঠে এসেছে।
এদিকে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই লি জে মিয়ং উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে সংলাপের চেষ্টা করছেন। তবে পিয়ংইয়ং এখনো পর্যন্ত দক্ষিণের কোনো সংলাপ প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি।
২০২৪ সালের অক্টোবরে উত্তরের অভিযোগে জানা যায়, দক্ষিণ কোরিয়ার ভেতর থেকে তিনবার ড্রোন উড়িয়ে উত্তর কোরিয়ার ভেতরে প্রচারণামূলক লিফলেট ফেলা হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনী বেলুনের মাধ্যমেও লিফলেট পাঠিয়েছিল বলে দেশটির সংবাদমাধ্যম নিশ্চিত করেছে।
এ ঘটনার পর দক্ষিণ কোরিয়ায় সৃষ্টি হয় এক অভূতপূর্ব রাজনৈতিক সংকট। হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে এসে প্রতিবাদ জানায়। সংসদ সদস্যরাও সরকারের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ভোট দেন। সুপ্রিম কোর্ট দ্রুত এই কার্যক্রমকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে। এর পরই প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ইউনকে অভিশংসিত করে পদ থেকে অপসারণ করা হয়। সামরিক আইন প্রয়োগের চেষ্টার অভিযোগে তিনি বর্তমানে কারাগারে বিচার অপেক্ষায় রয়েছেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনায় রয়েছে, প্রেসিডেন্ট মিয়ং যদি আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চান, তবে তা দুই কোরিয়ার ভবিষ্যৎ সম্পর্কের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তবে অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে এর বিরূপ প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।