ঘূর্ণিঝড় কালমায়েগির আঘাতের রেশ কাটতে না কাটতেই ফিলিপাইনের মধ্য ও পূর্বাঞ্চলে আবারও আঘাত হেনেছে সুপার টাইফুন ‘ফাং-ওং’ (Fung-Wong)। রবিবার (৯ নভেম্বর) স্থানীয় সময় ভোরে আঘাত হানার পর থেকেই তীব্র বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ার কবলে পড়েছে দেশটির লুজন দ্বীপসহ আশপাশের অঞ্চল। এখন পর্যন্ত দুই জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, এবং লাখো মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানায়, ফিলিপাইনের সবচেয়ে জনবহুল দ্বীপ লুজনের উত্তরাঞ্চলে ঝড়ের তীব্র প্রভাবে ব্যাপক বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দিয়েছে। প্রবল বাতাসে বিস্তীর্ণ অঞ্চল বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে।
কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, টাইফুন ‘ফাং-ওং’ ১৮৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস এবং ২৩০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া নিয়ে লুজন দ্বীপে প্রবেশ করেছে। এর প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাত ও জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, আজ রাতের প্রথম দিকে অরোরা প্রদেশে ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে। ঝড়ের তীব্রতা বিবেচনা করে ওই অঞ্চল থেকে দশ লাখেরও বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
নিরাপত্তার স্বার্থে রাজধানী ম্যানিলা, বাইকল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং স্যাংলিসহ বেশ কিছু বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ফিলিপাইনের বেসামরিক প্রতিরক্ষা অফিস জানিয়েছে, ক্যাটানডুয়ানেস শহরে একজন ডুবে মারা গেছেন এবং ক্যাটবালোগান এলাকায় একটি বাড়ি ধসে পড়লে এক নারী নিহত হয়েছেন।
স্থানীয়ভাবে ‘উওয়ান’ নামে পরিচিত এই টাইফুনটি এ বছর ফিলিপাইনে আঘাত হানা ২১তম ঘূর্ণিঝড়। সাধারণত দেশটিতে প্রতিবছর প্রায় ২০টি ঝড় আঘাত হানে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ফিলিপাইনে ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা ও তীব্রতা দুটোই বাড়ছে, যা উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।