ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে প্রায় সাড়ে তিনশত কোটি টাকা লোকসানের ভার মাথায় নিয়েই মোবারকগঞ্জ চিনিকলের ২০২৫–২৬ অর্থবছরের ৫৯তম মাড়াই মৌসুমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেল তিনটায় ভার্চুয়াল লাইভের মাধ্যমে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত হয়ে মাড়াই মৌসুম উদ্বোধন করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব ওবাইদুর রহমান। পরে তাঁর নির্দেশে মিলের ডোঙ্গায় আখ ফেলে নতুন মৌসুমের সূচনা করা হয়।
চলতি মাড়াই মৌসুমে ৫৬ দিনে মোট ৮০ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই এবং ৪ হাজার ৪শ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চিনি আহরণের গড় হার ধরা হয়েছে ৫.৫ শতাংশ। আখের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি মণে ২৫০ টাকা, যা কৃষকদের উৎসাহ বাড়াতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে সভাপতিত্ব করেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রাশিদুল হাসান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএসএফআইসির যুগ্ম সচিব ও পরিচালক আব্দুল আলিম খান, ঝিনাইদহ জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা পিএএ এবং বিএসএফআইসির চিফ অব পার্সোনেল শাহরীনা আনান।
মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী আ. ন. ম. জোবায়েরের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজোয়ানা নাহিদ, থানার ওসি জেল্লাল হোসেন, বিএনপি নেত্রী মুর্শিদা জামান বেল্টু, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হুসাইন আহম্মেদ, মোচিক শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হোসেন এবং আখচাষী মিজানুর রহমানসহ অনেকে। অনুষ্ঠানে আখ চাষে বিশেষ সাফল্য দেখানো চারজন আখচাষীকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
চিনিকল কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে প্রায় ৩৪৯ কোটি টাকা দেনায় জর্জরিত। তবুও উৎপাদন অব্যাহত রাখতে এবং কৃষকদের সহযোগিতায় নতুন মৌসুমে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মিলের মহাব্যবস্থাপক (কৃষি) গৌতম কুমার মণ্ডল জানান, এ বছর কৃষকদের আখের মূল্য বিকাশের মাধ্যমে পরিশোধ করা হবে। এতে কৃষকরা আখচাষে আরও আগ্রহী হবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
মোবারকগঞ্জ চিনিকলের এই নতুন মৌসুম উদ্বোধন স্থানীয় কৃষক, শ্রমিক ও কর্মকর্তাদের মধ্যে নতুন প্রত্যাশা সৃষ্টি করেছে—যে সংকট কাটিয়ে মিলটি আবারও লাভের মুখ দেখবে।