তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের প্রক্রিয়া ও জাতীয় নিয়োগ কাঠামো নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের ১৭তম দিনের সংলাপ শেষে এসব কথা বলেন দলের সদস্যসচিব আখতার হোসেন।
তিনি বলেন, "আমরা মনে করি, প্রধানমন্ত্রী, সংসদ নেতা ও দলীয় প্রধান একই ব্যক্তি হওয়া গণতন্ত্রের জন্য হুমকি। তাই আমরা চাই এই তিনটি দায়িত্বে তিনজন ভিন্ন ব্যক্তি থাকুক। তবে বৃহত্তর স্বার্থে আমরা সম্মত হয়েছি যে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা একই ব্যক্তি হতে পারেন, তবে তিনি দলের প্রধান হবেন না।"
আখতার হোসেন জানান, তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের প্রক্রিয়ায় তারা আর আগের মতো বিচার বিভাগ-নির্ভর কাঠামোর পক্ষে নয়। বরং রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনার ভিত্তিতে একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব এনেছে এনসিপি। প্রস্তাবিত কমিটিতে থাকবে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার ও তৃতীয় বৃহত্তম দলের একজন প্রতিনিধি। এই কমিটিই র্যাঙ্কড চয়েস ভোটিংয়ের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে মনোনয়ন দেবে।
তৃতীয় আলোচ্য বিষয় হিসেবে আখতার হোসেন বলেন, “জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের মাধ্যমে সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিয়োগের যে প্রস্তাব ছিল, তা থেকে সরে এসে এখন আলাদা আলাদা কমিটি গঠনের কথা বলা হচ্ছে, যেখানে তথ্য কমিশন, মানবাধিকার কমিশন ও অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়কে বাদ দেওয়া হয়েছে— যা আমাদের উদ্বেগের কারণ।”
তিনি প্রশ্ন তোলেন, “একটি স্বাধীন এবং একক নিয়োগ বডির ধারণা থেকে সরে আসার কারণ কী? আমরা কি আবার দলীয় নিয়োগভিত্তিক পুরনো পদ্ধতির দিকেই ফিরে যাচ্ছি?”
এনসিপি’র পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, “সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোতে দলীয় প্রভাবমুক্ত, স্বাধীন এবং সংবিধানসম্মত নিয়োগ কাঠামো নিশ্চিত করতে হবে।” আখতার হোসেন সাফ জানিয়ে দেন, “সংবিধানের বাইরে রেখে কোনো নিয়োগ কাঠামো পরিচালনা সম্ভব নয়।”