মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অজুহাতে যুক্তরাষ্ট্রকে নতুন তিনটি যুদ্ধে জড়িয়ে ফেলার ঝুঁকি নিচ্ছেন বলে সতর্ক করেছেন বিশ্লেষক ও কলামিস্ট টেড স্নাইডার। তিনি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য আমেরিকান কনজারভেটিভে প্রকাশিত এক মতামত নিবন্ধে বলেন, ট্রাম্প প্রশাসনের আগ্রাসী পররাষ্ট্রনীতি আমেরিকার আন্তর্জাতিক অবস্থানকে বিপন্ন করে তুলছে।
স্নাইডার লিখেছেন, “ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেকে ‘শান্তির প্রেসিডেন্ট’ হিসেবে দাবি করলেও বাস্তবে তিনি ইরান, ভেনেজুয়েলা ও নাইজেরিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে তিনটি নতুন ‘অর্থহীন যুদ্ধ’-এর দিকে ঠেলে দিচ্ছেন।” তার মতে, এসব যুদ্ধের পেছনে কোনো বাস্তব কারণ নেই, বরং তা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মিথ্যা তথ্যনির্ভর।
তিনি যুক্তি দেন, এই যুদ্ধগুলো আমেরিকার বৈশ্বিক ভাবমূর্তি ধ্বংস করবে এবং সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা আরও বাড়াবে। স্নাইডার মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য উদ্ধৃত করে বলেন, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে—এমন দাবি ভিত্তিহীন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “যখন ইরান পারমাণবিক হুমকি নয়, তখন তার সঙ্গে যুদ্ধের প্রয়োজন কোথায়?”
ভেনেজুয়েলা প্রসঙ্গে টেড স্নাইডার জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করেন, যেখানে বলা হয়েছে—ভেনেজুয়েলা যুক্তরাষ্ট্রে মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত নয়। তিনি লিখেছেন, “মাদুরো কোনো মাদক সম্রাট নন। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপ ভেনেজুয়েলায় কেবল অর্থহীনই নয়, বরং বিপর্যয় ডেকে আনবে।”
অন্যদিকে, ট্রাম্প সম্প্রতি ঘোষণা দেন যে, নাইজেরিয়ায় খ্রিস্টানদের রক্ষার নামে তথাকথিত ইসলামিক সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালাতে প্রস্তুত থাকতে পেন্টাগনকে নির্দেশ দিয়েছেন। তবে স্নাইডার এই যুক্তিকে ভ্রান্ত বলে উল্লেখ করে বলেন, নাইজেরিয়ায় সংঘাত ধর্মীয় নয়, বরং ভূমি ও সম্পদ দখলসংক্রান্ত স্থানীয় বিরোধ থেকেই সহিংসতা সৃষ্টি হয়েছে।
বিশ্লেষক আরও সতর্ক করেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র যদি এই তিনটি দেশে হস্তক্ষেপ করে, তবে বৈশ্বিক শান্তি ও আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তার ভাষায়, “এগুলো হবে মিথ্যার ওপর দাঁড়ানো যুদ্ধ, যা আমেরিকার জন্য আত্মঘাতী।”