রাশিয়ার সঙ্গে দীর্ঘ দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান যুদ্ধের অবসান ঘটাতে মার্কিন মধ্যস্থতায় শান্তি চুক্তির নতুন কাঠামোতে সম্মত হওয়ার জন্য ইউক্রেনকে কঠোর চাপ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি চুক্তিতে রাজি না হলে গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগি ও অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার মতো হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে বলে শুক্রবার (২১ নভেম্বর) রয়টার্স দুই উচ্চপদস্থ সূত্রের বরাতে জানিয়েছে।
ওয়াশিংটন ইউক্রেনের কাছে যে ২৮ দফার শান্তি পরিকল্পনার খসড়া উপস্থাপন করেছে, সেখানে উল্লেখ রয়েছে—ইউক্রেনকে রাশিয়ার হাতে অতিরিক্ত ভূখণ্ড ছাড়তে হবে, সামরিক বাহিনীর আকার সীমিত করতে হবে এবং ন্যাটোতে যোগদানের আনুষ্ঠানিক চেষ্টা থেকে সরে আসতে হবে। এই শর্তগুলোকে বিশ্লেষকরা ইউক্রেনের জন্য সবচেয়ে কঠিন সমঝোতা হিসেবে দেখছেন।
সূত্রগুলো জানায়, পূর্বের যেকোনো শান্তি আলোচনার তুলনায় এবার যুক্তরাষ্ট্রের চাপ আরও স্পষ্ট ও সরাসরি। যুক্তরাষ্ট্র চায় ইউক্রেন যেন আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যেই এই চুক্তির কাঠামোতে স্বাক্ষর করে।
গত বৃহস্পতিবার কিয়েভে মার্কিন সামরিক কর্মকর্তাদের একটি প্রতিনিধিদল প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করেছে। বৈঠকের পর থেকেই বিষয়টি আরও গতি পায়।
শুক্রবার জেলেনস্কি ইউরোপীয় মিত্র জার্মানি, ব্রিটেন ও ফ্রান্সের নেতাদের সঙ্গে ফোনে আলোচনা করেন। আলোচনায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব সরাসরি প্রত্যাখ্যান না করার বিষয়ে সতর্ক ছিলেন। তবে ইউক্রেনের মর্যাদা ও নিরাপত্তা রক্ষার ওপর তিনি জোর দেন।
জেলেনস্কি বলেন, “এই যুদ্ধের অবসান ঘটানোর লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং তার দলের প্রচেষ্টাকে আমরা মূল্য দিই। আমরা আমেরিকান পক্ষের প্রস্তুত করা নথির ওপর কাজ করছি। এটি অবশ্যই এমন একটি পরিকল্পনা হতে হবে, যা একটি বাস্তব এবং মর্যাদাপূর্ণ শান্তি নিশ্চিত করবে।”
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেনের দুর্বল অবস্থান এবং পশ্চিমা বিশ্বের সহায়তা কমে যাওয়ার বাস্তবতা মেনে নিয়েই যুক্তরাষ্ট্র শান্তি প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে চাইছে। তবে নতুন এই পরিকল্পনা গ্রহণ করা ইউক্রেনের জন্য রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত সংবেদনশীল এক সিদ্ধান্ত হয়ে দাঁড়াতে পারে।