পুরান ঢাকার বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী বিশেষ আদালত সরিয়ে নেওয়ার দাবিতে সড়ক অবরোধ করেন আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। বুধবার দিবাগত রাত ১টা থেকে শুরু হওয়া এই অবরোধ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে শেষ হয়।
অস্থায়ী বিশেষ আদালত সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়ে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেন। বিডিআর বিদ্রোহের বিচার কার্যক্রম আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত এই আদালতে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। তবে শিক্ষার্থীরা আদালত মাঠে বসানোর বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে এটি সরিয়ে নেওয়ার দাবি করছেন।
অবরোধের কারণে বকশীবাজার ও আশপাশের সড়কে দীর্ঘ সময় যান চলাচল বন্ধ ছিল। এতে আশপাশের এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়।
চকবাজার অঞ্চলের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. মাহফুজার রহমান জানিয়েছেন, “শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরানো হয়েছে। আদালতের বিচারকের সঙ্গে তাঁদের দাবি নিয়ে আলোচনা হবে—এই শর্তে তাঁরা অবরোধ প্রত্যাহার করেছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। আদালত এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।”
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর) সদর দপ্তর পিলখানায় বিদ্রোহ ঘটে। এ বিদ্রোহে বিডিআরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা নিহত হন। বিদ্রোহে সব মিলিয়ে ৭৪ জনের প্রাণহানি ঘটে।
পিলখানার হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় দুইটি মামলা হয়। একটি হত্যা মামলা এবং অন্যটি বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে। হত্যা মামলায় বিচারিক আদালত ও হাইকোর্ট রায় ঘোষণা করলেও বিস্ফোরক মামলার বিচার এখনো চলছে।
বুধবারের অবরোধের আগেও আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী বিশেষ আদালতে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
গত ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় একদল লোক মাঠের সীমানাপ্রাচীর টপকে ভেতরে প্রবেশ করে আদালতের দরজা ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। তারা আদালতের ভেতরে থাকা চেয়ার-টেবিলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
বিডিআর বিদ্রোহ মামলায় দণ্ডিত ও চাকরিচ্যুত সাবেক বিডিআর সদস্যরা বুধবার পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মামলার পুনঃতদন্ত, ন্যায়বিচার নিশ্চিত, এবং চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহালের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
শিক্ষার্থীদের অবরোধের পাশাপাশি চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্য ও তাঁদের স্বজনেরা শাহবাগে বৃহস্পতিবার ‘ব্লকেড’ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন।