রাজধানীর পুরান ঢাকার কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও সোহরাওয়ার্দী কলেজে বহিরাগতদের হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ইত্তেফাক ডিজিটালের মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার জাকির হোসেনের ওপর হামলা এবং ইত্তেফাকের লোগো সম্বলিত মাইক্রোফোন ও মোবাইল ভাঙচুর করা হয়।
রোববার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এতে সাংবাদিকসহ প্রায় ৪০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক জাকির হোসেন জানান, “সংবাদ সম্মেলনের সময় আমি লাইভে ছিলাম। লাইভ করতে করতে তৃতীয় তলায় উপধ্যাক্ষের কক্ষের পাশে ভাঙচুর চলছিল সেখানে যাই। তখন হেলমেট পরা একজন এসে বলে- ভাই লাইভে থাকলে বন্ধ করেন। এখানের কোনো ফুটেজ ও ভিডিও করা যাবে না। লাইভ বন্ধ করেন। আমি লাইভ বন্ধ করে চলে আসার সময় কয়েকজন এসে বলে, ‘এই ভেঙে ফেল, ভেঙে ফেল।’ হঠাৎ পেছন থেকে দুজন এসে আমার মাইক্রোফোন ও মোবাইলে আঘাত করে ভেঙে ফেলে এবং সেই মুহূর্তে কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমার ওপর হামলা করে।”
হামলার ফলে কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। কলেজের গাড়ি, ক্লাসরুম, অফিসসহ কোনোকিছুই হামলার হাত থেকে রক্ষা পায়নি। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও হামলার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ৭ কলেজের স্নাতক পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা পুরো পরীক্ষা শেষ করতে পারেননি।
এক বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থী জানান, “সকালে ডিএমআরসি ও আশেপাশের কলেজগুলো ন্যাশনাল মেডিকেলের সামনে বিক্ষোভ করতে আসলে কবি নজরুলের শিক্ষার্থীরা পুনরায় আমাদের ওপর হামলা চালায়। পরবর্তীতে আমরা সমন্বিতভাবে কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের হামলার জবাবে তাদের প্রতিহত করি। এতে আমাদের প্রায় ২৫-৩০ জন আহত হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজকে উপযুক্ত জবাব না দেওয়া পর্যন্ত আমরা এখান থেকে যাবো না।”
সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কাকলী মুখোপাধ্যায় প্রশাসনের অসহযোগিতার অভিযোগ করে বলেন, “এখন পর্যন্ত কেউ এগিয়ে আসেনি। একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠানের বড় ক্ষতি হয়ে গেল। একটি পাবলিক পরীক্ষা চলমান ছিল। তারপরও কেন হামলার ঘটনা ঘটেছে সে ব্যাপারে আমরা কিছুই জানি না।”
এই ঘটনার পর দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। বহিরাগতদের এই হামলা এবং প্রশাসনের নির্লিপ্ততা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।