দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ আমিনুল ইসলাম একসঙ্গে প্রায় ১৯০টি পদের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। বিশাল কর্মভার থাকা সত্ত্বেও তিনি নিরলসভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাভাবিক দায়িত্বের পাশাপাশি তিনি সরকারের দেওয়া অতিরিক্ত দায়িত্বও পালন করছেন। উপজেলার ৪৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১০টি মাদ্রাসা ও ৭টি কলেজের সভাপতির দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে তাকে। পাশাপাশি, ১২১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন তিনি, যা উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতির দায়িত্বের অংশ।
কাহারোল উপজেলায় উপজেলা চেয়ারম্যান, দুইজন ভাইস চেয়ারম্যান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় সভাপতির পদ শূন্য থাকায় সব দায়িত্ব ইউএনওর কাঁধে পড়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সরিয়ে দেওয়া হয়। ফলে, ৪০-৪৫টি কমিটির সভাপতির দায়িত্বের পরিবর্তে বর্তমানে ইউএনও আমিনুল ইসলামকে অন্তত ১৯০টি পদের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে।
তিনি আইন শৃঙ্খলা কমিটি, শিক্ষা, কৃষি উন্নয়ন, প্রতিবন্ধী ভাতা, হাট-বাজার ব্যবস্থাপনা, বয়স্ক-বিধবা ও স্বামী নিগৃহীত ভাতা, অতি দরিদ্রদের কর্মসংস্থান, মাতৃত্বভাতা, চোরাচালান প্রতিরোধ, এনজিও সমন্বয়, টেন্ডার, টিআর-কাবিটা, সরকারি দপ্তরগুলোর কমিটি এবং বিভিন্ন দিবস উদযাপনের দায়িত্বও পালন করছেন।
উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ মামুনুর রশিদ চৌধুরী জানান, আগে প্রতিদিন শত শত মানুষ তাদের কাছে সেবা নিতে আসতেন। এখন উপজেলা চেয়ারম্যান না থাকায় সব কাজের চাপ ইউএনওর উপর পড়েছে। এত দায়িত্ব একা সামলানো কঠিন হলেও তিনি অবিশ্বাস্য আন্তরিকতার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, “এতগুলো দায়িত্ব একা পালন করা কঠিন হলেও নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতেই হবে। অতিরিক্ত সময় দিয়ে হলেও জনগণের সেবা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি।” তিনি আরও জানান, অফিসের কর্মীদের নিয়ে অতিরিক্ত সময় কাজ করে যাচ্ছেন, যাতে উপজেলা পরিষদে আসা মানুষের কোনো হয়রানির শিকার না হতে হয়।
এই বিরল নিষ্ঠা ও পরিশ্রমের কারণে ইউএনও আমিনুল ইসলাম ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছেন।