মুন্সীগঞ্জ সদরে মেঘনা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের রেষ কাটতে না কাটতেই, এবার এক অন্তঃসত্ত্বা নারী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আধারা ইউনিয়নের কালিরচর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা আহত নারীকে উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে ভর্তি করেন। আহত নারী পিংকি আক্তার (৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা) গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। চিকিৎসক ডাঃ শৈবাল বসাক জানিয়েছেন, গুলি তার কোমরের ডান পাশ দিয়ে ঢুকে অপর পাশ দিয়ে বের হয়ে গেছে, তবে বর্তমানে তিনি আশঙ্কামুক্ত রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রাতে মেঘনা নদীতে নৌ-ডাকাত কিবরিয়া মিজি ও কানা জহির গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে দুজন নিহত ও একজন গুলিবিদ্ধ হন। এই ঘটনার জের ধরেই শুক্রবার সকালে আবার সংঘর্ষ বাধে।
পুলিশ জানিয়েছে, সকালে কিবরিয়া গ্রুপের সদস্য রাজু সরকারের বাড়িতে হামলা চালায় কানা জহিরের ভাই শাহিন বেপারি ও তার সহযোগীরা। এ সময় অতর্কিত গুলিতে পিংকি আক্তার গুলিবিদ্ধ হন।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার মুহম্মদ শামসুল আলম সরকার।
এদিকে, মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় মেঘনা নদীতে বালুমহালের নির্ধারিত সীমানার বাইরে গিয়ে নদীর পাড় ঘেঁষে বালু উত্তোলনের সময় স্থানীয়রা বাধা দিলে চার রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়। এতে নাহিদ (২০) নামে এক যুবক গুরুতর আহত হন। শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে গজারিয়ার ইমামপুর ইউনিয়নের বেরু মোল্লাকান্দি গ্রামের কাছে মেঘনা নদীর তীরে এই ঘটনা ঘটে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার রাতে কিবরিয়া মিজি ও কানা জহির গ্রুপের সংঘর্ষে মুন্সীগঞ্জের কালিরচর ও চাঁদপুরের মতলব এলাকার দুইজন নিহত হন। গুলিবিদ্ধ হয়ে আরও একজন গুরুতর আহত হন, যাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
অবৈধ বালু উত্তোলন নিয়ে একের পর এক সংঘর্ষের ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছে।