1. [email protected] : Hossain Monir : Hossain Monir
  2. [email protected] : RT BD NEWS : RT BD NEWS
  3. [email protected] : RT BD NEWS :
কালীগঞ্জে ফসলি জমির মাটি কেটে রাতারাতি সম্পদশালী, প্রশাসনের নীরবতায় কৃষকের দুশ্চিন্তা - RT BD NEWS
রবিবার, ০৪ মে ২০২৫, ০৭:৩১ অপরাহ্ন

কালীগঞ্জে ফসলি জমির মাটি কেটে রাতারাতি সম্পদশালী, প্রশাসনের নীরবতায় কৃষকের দুশ্চিন্তা

আরিফ মোল্ল্যা
  • প্রকাশিত: শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪
কালীগঞ্জে ফসলি জমির মাটি কেটে রাতারাতি সম্পদশালী, প্রশাসনের নীরবতায় কৃষকের দুশ্চিন্তা
শুঁয়োপোকা ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের মাঠে মাঠে এভাবে ফসলী জমির উপরিভাগের মাটি কেটে নেয়া হচ্ছে।

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় ফসলি জমির মাটি কাটার মহোৎসব চলছে। দিনের আলো থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এক্সক্যাভেটর (ভেকু) ব্যবহার করে কৃষিজমির উর্বর মাটি কেটে বিক্রি করছে একটি শক্তিশালী চক্র। স্থানীয় প্রশাসনের নীরব ভূমিকায় এ অবৈধ কর্মকাণ্ড অব্যাহত থাকায় কৃষিজমি হ্রাসের পাশাপাশি আবাদি জমির উর্বরতা হারাচ্ছে।

ফসলি জমি থেকে পুকুর খনন ও মাটি বিক্রির চিত্র

শুক্রবার সরেজমিনে কালীগঞ্জ উপজেলার সাতগাছিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ধানী জমিতে এক্সক্যাভেটর দিয়ে পুকুর খনন করা হচ্ছে। এতে প্রায় ২০০ বিঘা জমি পুকুরের নিচে চাপা পড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষকরা। সাতগাছিয়া গ্রামের কৃষক আলমগীর হোসেন জানান, পুকুর কাটার ফলে আমাদের আবাদি জমি নষ্ট হচ্ছে। প্রথমে আমরা বাঁধা দিলেও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সহযোগিতায় কাজ বন্ধ করা সম্ভব হয়নি।

জমির মালিক সাদিকপুর গ্রামের মোস্তফা কামাল মাটি কাটার কাজ পরিচালনার জন্য সাব-কন্ট্রাকটর তারেক রহমানকে নিয়োগ দিয়েছেন। তারেক জানান, তিনি জেলা প্রশাসক (ডিসি) অফিস থেকে অনুমোদন নিয়েছেন বলে দাবি করেন। কিন্তু অনুমোদনের কোনো সুনির্দিষ্ট কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হন।

মাটি বিক্রি ও পরিবহনের প্রভাব

এ উপজেলায় ফসলি জমির মাটি কেটে ইটভাটাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রকল্পে বিক্রি করা হচ্ছে। এসব মাটি পরিবহনের জন্য ৮-১০টি ট্রলি ব্যবহার করা হচ্ছে, যা স্থানীয় গ্রামীণ সড়কের ক্ষতি সাধন করছে। মাটি কাটার কারণে কৃষিজমির উপরের টপ সয়েল হারিয়ে জমির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে।

মৃত্তিকা বিশেষজ্ঞদের সতর্কতা

ঢাকার মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এ কে এম জগলুল পাশা বলেন, “জমির উপরের টপ সয়েল ফসল উৎপাদনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি কেটে ফেললে জমি ভবিষ্যতে ফসল উৎপাদনে অক্ষম হয়ে পড়বে।”

প্রশাসনের নীরব ভূমিকা

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দেদারুল আলম বলেন, “মাঠ পর্যায়ে মাটি কাটার বিষয়ে আমার কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি। তবে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশাসনের এ ধরনের অবস্থান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

ক্ষতির মুখে কৃষি ও কৃষক

কালীগঞ্জ উপজেলা বাংলাদেশের একটি কৃষি-সমৃদ্ধ অঞ্চল। এখানে ধান, পাট, পেঁয়াজ, আলু, কাঁচা মরিচসহ নানা ধরনের ফসলের চাষ হয়। জমির মাটি কেটে বিক্রির ফলে আবাদি জমি হ্রাস পাওয়ায় কৃষি উৎপাদন হুমকির মুখে পড়ছে।

ফসলি জমি রক্ষা ও কৃষিজীবী মানুষের স্বার্থে প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া এখন সময়ের দাবি। মাটি কাটার এই অবৈধ কর্মকাণ্ড বন্ধ না হলে কৃষি ও পরিবেশ উভয়ই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 𝑹𝑻 𝑩𝑫 𝑵𝑬𝑾𝑺 আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট