জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ২২ জানুয়ারি একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে, যার মাধ্যমে বেশ কিছু পণ্যের ওপর থেকে বাড়তি মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) প্রত্যাহার করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তটি ব্যবসায়ী এবং খাত সংশ্লিষ্টদের জন্য সুখবর হিসেবে এসেছে, বিশেষ করে খাদ্যসেবা, মোবাইল ফোন, চিকিৎসা সেবা এবং গাড়ির সেবাখাতে।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, চিকিৎসা সেবা এবং ওষুধ শিল্পের ওপর ভ্যাট বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়েছে। পূর্বে যে ভ্যাট বৃদ্ধি করা হয়েছিল, তা এখন আরোপিত হবে না, ফলে ওষুধ খাতে ভ্যাটের হার ২.৪ শতাংশে ফিরে এসেছে। এটি চিকিৎসা সেবা সহজতর করবে এবং সাধারণ মানুষ বিশেষ করে দরিদ্র জনগণের জন্য সহায়ক হবে।
এছাড়া, ডিজিটালাইজেশনের প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে মোবাইল ফোনের সিম ও রিম কার্ড এবং আইএসপি (ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী) সেবার ওপর আরোপিত অতিরিক্ত শুল্কও তুলে নেওয়া হয়েছে। মোবাইল সেবার ক্ষেত্রে এটি একটি বড় পদক্ষেপ, যা ডিজিটাল সংযোগ বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।
রেস্তোরাঁ সেবার ক্ষেত্রেও বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে। তিন, চার ও পাঁচ-তারকা হোটেল ছাড়া, অন্যান্য সব রেস্তোরাঁর ওপর আরোপিত ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর ফলে রেস্তোরাঁর খাবারের দাম সুলভ হবে, যা সাধারণ মানুষের জন্য আরও অ্যাক্সেসযোগ্য হবে।
এছাড়া, মোটরগাড়ির গ্যারেজ ও ওয়ার্কশপ, পাশাপাশি অন্যান্য পোশাক বিপণনের ওপর থেকে অতিরিক্ত ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে, নিজস্ব ব্র্যান্ডের পোশাকের ক্ষেত্রে ভ্যাট অপরিবর্তিত থাকবে।
নন-এসি হোটেল, মিষ্টান্ন ভান্ডার এবং অন্য পোশাক বিপণনের ক্ষেত্রে ভ্যাটের হার ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে, যা ব্যবসায়ীদের জন্য সহায়ক হবে এবং খরচ কমাবে।
এছাড়া, সম্প্রতি ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি নিয়ে অনেক খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং সংগঠন ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল। বিশেষ করে, অর্থনৈতিক শ্বেতপত্র কমিটির প্রধান দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ও জাতীয় নাগরিক কমিটির মতো প্রতিষ্ঠানগুলো এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছিল। তাদের মতে, ভ্যাট বৃদ্ধির ফলে সাধারণ মানুষের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়তে পারে।
এই পরিবর্তনগুলি দেশের ব্যবসায়িক পরিবেশকে আরও সহায়ক ও প্রগতিশীল করবে এবং একদিকে সরকারের রাজস্ব আদায়ের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে, অন্যদিকে সাধারণ মানুষের জন্য সেবা গ্রহণ সহজ হবে।