মঙ্গলবার, রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের সহস্রতম দিনে, ইউক্রেনের বাহিনী প্রথমবারের মতো মার্কিন ‘আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেম’ (এটিএসিএমএস) ব্যবহার করে রাশিয়ার ব্রিয়ানস্ক এলাকায় হামলা চালায়। হামলায় উল্লেখযোগ্য ক্ষতি না হলেও রাশিয়া তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এবং পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের জন্য সামরিক নীতিমালা সংশোধন করেছে।
এদিকে, রাশিয়ার হামলার আশঙ্কায় ইউক্রেনে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ন্যাটোর সদস্য দেশ গ্রিস, ইতালি এবং স্পেনও তাদের দূতাবাস বন্ধ করে দিয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যুদ্ধের সাম্প্রতিক গতিপ্রকৃতি পূর্ব ইউরোপে পরমাণু হামলার সম্ভাবনা বাড়িয়েছে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রয়োজনে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিয়েছেন। পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে, যা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ডেকে আনতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা।
তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের শঙ্কার মধ্যেও শান্তি ফেরানোর আশা দেখা দিয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, রাশিয়া সংঘাত বন্ধে আলোচনা করতে রাজি হতে পারে তবে পুতিনের দুটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত রয়েছে, রাশিয়া দখলকৃত ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড ছাড়বে না, ইউক্রেন ন্যাটো জোটে যোগ দিতে পারবে না।
এর পাশাপাশি যুদ্ধরত রাশিয়ান সেনাদের নিরাপদে দেশে ফিরতে দিতে হবে এবং আমেরিকা-রাশিয়ার শান্তি চুক্তিতে ইউক্রেনকে নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকতে হবে।
ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার (আইএসডব্লিউ) জানিয়েছে, ২০২৪ সালে রাশিয়া ইউক্রেনের আগের বছরের তুলনায় ছয় গুণ বেশি ভূমি দখল করেছে। রাশিয়া এখন ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দনবাস অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ লজিস্টিক সেন্টারগুলো নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করছে।
অন্যদিকে, রাশিয়ার তুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনের সাম্প্রতিক অভিযানে ব্যর্থতা এসেছে। বিশ্লেষকরা একে কৌশলগত বিপর্যয় উল্লেখ করেছেন। লোকবল সংকটে পড়া ইউক্রেন এখন রক্ষণাত্মক অবস্থানে যেতে বাধ্য হচ্ছে।
ইউক্রেন যুদ্ধ একদিকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের শঙ্কা সৃষ্টি করেছে, অন্যদিকে শান্তি আলোচনার ক্ষীণ আশা জাগিয়েছে। তবে যুদ্ধের ইতি টানতে হলে বৈশ্বিক শক্তিগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সমঝোতা এবং দায়িত্বশীলতার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।