নড়াইল সদর উপজেলার সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্যকে ধর্ষণের পর বিষপ্রয়োগে হত্যার অভিযোগে পুলিশ একজনকে আটক করেছে। শনিবার ভোরে মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার হরিশপুর এলাকা থেকে আটক হন অভিযুক্ত ফারুক মোল্যা (৫০)। তিনি নড়াইল সদর উপজেলার দৌলতপুর এলাকার বাসিন্দা ওসমান মোল্যার ছেলে।
নিহত নারী ইউপি সদস্যের পরিবারের অভিযোগ অনুযায়ী, ঘটনার দিন মঙ্গলবার সকালে টিসিবির মালামাল বিতরণ শেষে বাড়ি ফেরার পথে স্থানীয় যুবক রাজিবুল তাকে ফোন করে টাকা দেওয়ার জন্য ডাকে। পরবর্তীতে তিনি স্থানীয় এক ব্যক্তির বাড়িতে গিয়ে রাজিবুলসহ কয়েকজন যুবক তাকে ধর্ষণ করে এবং দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।
ভুক্তভোগী নারী চাঁদা দেওয়ার ব্যাপারে সবাইকে জানিয়ে দেওয়ার হুমকি দিলে অভিযুক্তরা তাকে ভয় দেখিয়ে মুখে বিষ ঢেলে দেয়। বিষ খাওয়ার পর, তিনি বাড়ি ফিরে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েন, কিন্তু ভয়ের কারণে কাউকে কিছু বলেননি। পরদিন, বুধবার সকালে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালেই তিনি তার ছেলেকে পুরো ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেন, যার মধ্যে অভিযুক্তদের নামও ছিল।
নিহত নারীর ছেলে জানান, “মায়ের সঙ্গে ঘটে যাওয়া সব ঘটনা তিনি আমাকে জানিয়ে দিয়ে আমার হাতের ওপর মারা যান। আমি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের কঠিন বিচার চাই, তাদের ফাঁসি চাই। আমি শুধু চাই আমার মায়ের বিচার হোক।”
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) বজলুর রশীদ জানান, প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে, ওই নারীকে ধর্ষণের পর বিষ খাওয়ানো হয়েছে। তার শরীরে ধর্ষণের চিহ্ন পাওয়া গেছে এবং আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়া, তার পেটে বিষ পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তের পর ভিসেরা প্রতিবেদন হাতে এলে ঘটনার বিস্তারিত সম্পর্কে বলা যাবে।
নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম আজ দুপুরে প্রথম আলোকে জানান, “ঘটনার পরপরই পুলিশ এলাকা পরিদর্শন করেছে এবং পরিবারের অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে একজনকে আটক করা হয়েছে এবং তদন্ত সাপেক্ষে সব অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হবে। আমরা আশা করছি দ্রুত এই ঘটনার রহস্য উন্মোচন হবে।”
এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে এবং স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সকলেই এই ঘটনা দ্রুত সুষ্ঠু বিচার চাচ্ছেন।