কানাডার রাজনীতিতে নতুন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত সাবেক এমপি রুবি ধল্লা। তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে লিবারেল পার্টির নেতৃত্বের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশ নিয়েছেন এবং কানাডার প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
রুবি ধল্লা ২০০৪ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত কানাডার ব্র্যাম্পটন-স্প্রিংডেল আসনের এমপি ছিলেন। দীর্ঘ রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের অভিজ্ঞতা নিয়ে এবার তিনি লিবারেল পার্টির নেতৃত্বের জন্য শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছেন। বিভিন্ন পোস্ট ও অনুষ্ঠানে তিনি জাস্টিন ট্রুডোর উত্তরসূরি হওয়ার তীব্র ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
নির্বাচনের আগে নিজের প্রচারণায় রুবি ধল্লা অভিবাসন নীতি নিয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী হলে তিনি কানাডা থেকে সব অবৈধ অভিবাসীকে বিতাড়িত করবেন এবং মানব পাচার কঠোরভাবে দমন করবেন।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ (পূর্বে টুইটার) এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, “প্রধানমন্ত্রী হলে আমি অবৈধ অভিবাসীদের দেশ থেকে বের করে দেব এবং মানব পাচার কঠোরভাবে বন্ধ করব। এটাই আমার প্রতিশ্রুতি।”
তার এই কঠোর অবস্থানের কারণে অনেকেই তাকে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তুলনা করছেন এবং ‘লেডি ট্রাম্প’ নামে অভিহিত করছেন।
দ্বিতীয়বার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ডোনাল্ড ট্রাম্প অবৈধ অভিবাসন ইস্যুতে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। তিনি ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম দিনেই ঘোষণা দেন যে, কোনো অবৈধ অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রে থাকতে পারবে না এবং এই নীতি বাস্তবায়নও শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে বহু মানুষকে আটক করে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
রুবি ধল্লার অভিবাসন নীতিও অনেকটা একই রকম হওয়ায়, অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক তাকে ট্রাম্পের আদলে একজন কঠোর নীতির রাজনীতিবিদ হিসেবে দেখছেন।
রুবি ধল্লা লিবারেল পার্টির প্রথম নারী নেতা হওয়ার পাশাপাশি কানাডার প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছেন। এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, “আমরা ইতিহাস সৃষ্টি করতে চলেছি, লিবারেল পার্টির প্রথম নারী নেতা এবং কানাডার পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে।”
তার এই ঘোষণার পর থেকেই কানাডার রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। অভিবাসন ও মানব পাচার ইস্যুতে তার কঠোর অবস্থান একদিকে যেমন সমর্থন পাচ্ছে, তেমনই সমালোচনাও সৃষ্টি করছে।
রুবি ধল্লার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে অংশগ্রহণ কানাডার রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তার কঠোর অভিবাসন নীতি, ‘লেডি ট্রাম্প’ উপাধি এবং লিবারেল পার্টির নেতৃত্ব দখলের প্রতিযোগিতা তাকে আরও আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে এসেছে। এখন দেখার বিষয়, তিনি কতদূর যেতে পারেন এবং কানাডার জনগণের সমর্থন কেমন পান।