জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ আশা প্রকাশ করেছেন যে, স্বল্প সময়ের মধ্যে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করা সম্ভব হবে। শনিবার (২২ মার্চ) সকালে জাতীয় সংসদের এলডি হলে খেলাফত মজলিশের সঙ্গে বৈঠক শুরুর আগে তিনি এই মন্তব্য করেন।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বৈঠকের শুরুতে বলেন, ‘অনেক ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আমাদের মতামতের মিল রয়েছে, আবার কিছু ক্ষেত্রে ভিন্নমতও আছে। আমরা সেসব মতামত শুনব এবং আলোচনা করব। আমরা বিশ্বাস করি, সংলাপের মাধ্যমে জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করা সম্ভব হবে।’ তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, আলোচনায় অংশ নেওয়া দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতে আলোচনা এগিয়ে নেওয়া হবে।
২০২৪ সালের জুলাই-অগাস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করে। ইতোমধ্যে ছয়টি কমিশন – সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন এবং পুলিশ সংস্কার কমিশন তাদের সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ১৩ মার্চের মধ্যে ৩৮টি রাজনৈতিক দলকে সংস্কার সুপারিশের ওপর মতামত জানাতে অনুরোধ করেছিল। তবে এখন পর্যন্ত অর্ধেক দল তাদের মতামত জমা দেয়নি।
যেসব দল ইতোমধ্যে মতামত জমা দিয়েছে: ১. লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) 2. খেলাফত মজলিশ 3. জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ 4. জাকের পার্টি 5. ভাসানী অনুসারী পরিষদ 6. জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম) 7. ‘আম জনতার দল’ 8. রাষ্ট্রসংস্কার আন্দোলন 9. বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশ 10. বাংলাদেশ জাসদ 11. বাংলাদেশ লেবার পার্টি 12. আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) 13. নাগরিক ঐক্য
জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে গত বৃহস্পতিবার থেকে। প্রথম বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সঙ্গে। ধারাবাহিকভাবে অন্যান্য দলগুলোর সঙ্গেও আলোচনা অব্যাহত থাকবে।
জাতীয় ঐকমত্য গঠনের এই প্রচেষ্টা রাজনৈতিক দলগুলোর সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং গঠনমূলক সংলাপের ওপর নির্ভর করছে। অর্ধেক দল এখনো তাদের মতামত দেয়নি, যা কমিশনের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। তবে আলোচনার অগ্রগতি আশাব্যঞ্জক, এবং কমিশন দ্রুততম সময়ের মধ্যে একটি কার্যকর সমঝোতায় পৌঁছানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।