মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের মাত্র ছয় দিন আগে উত্তেজনা বাড়িয়ে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে উত্তর কোরিয়া। দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনীর বরাতে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) এ তথ্য জানিয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফ (জেসিএস) জানিয়েছে, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উত্তর কোরিয়া দেশের পূর্ব উপকূল থেকে সমুদ্রের দিকে একাধিক স্বল্প-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছে।
জেসিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্ষেপণাস্ত্রগুলো উত্তর কোরিয়ার জাগ্যাং প্রদেশ থেকে ছোড়া হয়েছে এবং ২৫০ কিলোমিটার দূরত্ব পর্যন্ত উড়ে গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, উত্তর কোরিয়া আরও ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী সতর্ক বার্তা দিয়ে জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার এমন কার্যক্রম কড়া নজরদারিতে রাখা হচ্ছে। এ বিষয়ে পাওয়া সব তথ্য যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের সঙ্গে শেয়ার করা হচ্ছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট চই সাং-মোক বলেছেন, “উত্তর কোরিয়ার সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ ইঙ্গিত দিচ্ছে তারা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে চাচ্ছে। আমরা এর যথাযথ জবাব দেব।”
বিশ্লেষকদের মতে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের ঠিক আগে উত্তর কোরিয়ার এই পদক্ষেপ নতুন মার্কিন প্রশাসনকে শক্ত বার্তা দেওয়ার জন্য। ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর নীতি মোকাবিলা করতে উত্তর কোরিয়া শক্তি প্রদর্শন করছে।
উল্লেখ্য, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন এর আগে ট্রাম্পের নীতির কঠোর সমালোচনা করেছেন। তিনি বারবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, “উত্তর কোরিয়া কখনোই তার সামরিক ক্ষমতা কমাবে না।”
উত্তর কোরিয়া গত কয়েক বছরে একাধিকবার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে। তবে সাম্প্রতিক উৎক্ষেপণগুলো কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, উত্তর কোরিয়ার এমন কার্যক্রম শুধু দক্ষিণ কোরিয়া নয়, পুরো এশিয়া অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি তৈরি করছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী ২০ জানুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করবেন। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, উত্তর কোরিয়ার এই পদক্ষেপ নতুন মার্কিন প্রশাসনের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।
আগামী দিনে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক কেমন হবে, তা নিয়ে সবার মধ্যেই কৌতূহল তৈরি হয়েছে। উত্তর কোরিয়ার সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের আগে উত্তর কোরিয়ার এই ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ নতুন করে উত্তেজনা তৈরি করেছে। দক্ষিণ কোরিয়া সতর্ক অবস্থানে থাকলেও উত্তর কোরিয়ার এই কার্যক্রম আঞ্চলিক স্থিতিশীলতায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম দিনগুলোতে এই ইস্যু বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।