পৌষের প্রথমার্ধ পেরিয়ে গেলেও শীতের প্রকোপ এতদিন তেমন অনুভূত হয়নি। তবে বছরের প্রথম দিন থেকে শুরু হওয়া কুয়াশামোড়া শীত সারা দেশে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বিশেষত উত্তরাঞ্চলে শীত ও হিমেল বাতাসে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। রাজধানী ঢাকাতেও কুয়াশার বিস্তার এবং তীব্র ঠাণ্ডার প্রভাব লক্ষ করা গেছে।
আবহাওয়াবিদদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহজুড়ে কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, জানুয়ারিতে দেশে ৩ থেকে ৮টি মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এ সময়ে তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামতে পারে। উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে ৩ থেকে ৪টি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ দেখা দিতে পারে, যার ফলে তাপমাত্রা ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়াবিদ ড. আবুল কালাম মল্লিক জানিয়েছেন, শীতের প্রকোপ ধীরে ধীরে দেশের পূর্বাঞ্চল পর্যন্ত বিস্তার লাভ করবে। ঘন কুয়াশার কারণে আগামী কয়েক দিনে তাপমাত্রার অনুভূতি আরও কমে আসবে।
গতকাল কুয়াশার কারণে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে বিমান ওঠানামা ছয় ঘণ্টা বন্ধ ছিল। এছাড়া নদীপথ ও সড়ক যোগাযোগেও ঘন কুয়াশার কারণে ভোগান্তি দেখা দিয়েছে।
আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের শীতকালীন ঠাণ্ডা বাতাস মূলত উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও হিমালয় থেকে আগত। এসব বাতাস শীতকালে দেশের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়, যা হিমেল অনুভূতির সৃষ্টি করে।
গতকাল দিনাজপুরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। ঢাকায় তাপমাত্রা ছিল ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে শীতের প্রকোপ বেশি দেখা যাচ্ছে।
আবহাওয়াবিদ শাহানাজ সুলতানা জানিয়েছেন, উপ-মহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমী লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। শীতের সময়ে তাপমাত্রা ক্রমশ হ্রাস ও বৃদ্ধি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।
শীতের তীব্রতা বৃদ্ধির ফলে বিভিন্ন অঞ্চলে জনজীবন ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। শীত মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
শীতের এই ধারা ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে ধারণা করছেন আবহাওয়াবিদরা। শীতজনিত রোগের প্রতিরোধ ও জনজীবন স্বাভাবিক রাখতে সতর্কতার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।