বাংলাদেশকে ২০২৪ সালের বর্ষসেরা দেশ হিসেবে ঘোষণা করেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ‘দ্য ইকোনমিস্ট’। এ উপলক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে একটি বিশেষ সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে প্রতিষ্ঠানটি। সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস দেশের সাম্প্রতিক সাফল্য, তরুণদের ভূমিকা, এবং নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেন।
সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস জানান, ২০২৫ সালের জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পর তিনি তার নিয়মিত কাজে ফিরে যাবেন। তিনি বলেন, “আমার চাকরি আসলে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আমাকে জোর করে এ কাজে আনা হয়েছে। আমি আমার কাজ করছিলাম এবং তা উপভোগ করছিলাম। এ জন্য আমি প্যারিসে ছিলাম। সেখান থেকে আমাকে টেনে আনা হয়েছে অন্য কিছু করার জন্য। সুতরাং আমি আমার নিয়মিত কাজে ফিরে যেতে পারলে খুশি হব।”
তিনি তার সারা জীবনের তৈরি করা আন্দোলন ও উদ্যোগে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছার কথাও জানান। ড. ইউনূস বিশ্বাস করেন, তরুণদের ওপর বিনিয়োগ করাই ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে যাওয়ার সঠিক কৌশল।
বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের ঝুঁকি প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, “আমি আশ্বস্ত করছি যে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দেবে না। তরুণেরা ধর্ম নিয়ে নিরপেক্ষ। তারা নতুন বাংলাদেশ গড়তে চায়। এই তরুণেরা পুরো বিশ্ব পরিবর্তন করতে পারে।”
তরুণদের শক্তি ও সম্ভাবনা নিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের উচিত তাদের প্রতি মনোযোগ দেওয়া। বিশেষ করে তরুণীদের ওপর। তারা বাংলাদেশের অভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আমাদের উচিত তরুণ-তরুণীদের স্বপ্ন পূরণের সুযোগ দেওয়া।”
তিনি জানান, তার নেতৃত্বাধীন ক্যাবিনেটেও তরুণদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং তারা সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন।
ড. ইউনূস বাংলাদেশকে বিশ্বের একটি শক্তিশালী উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “বাংলাদেশ যা করেছে এটি একটি উদাহরণ যে তরুণরা কতটা শক্তিশালী।”
প্রতিবছরের মতো এবারও দ্য ইকোনমিস্ট বর্ষসেরা দেশ নির্বাচন করেছে। ২০২৪ সালে এই সম্মাননা পেয়েছে বাংলাদেশ। এই স্বীকৃতি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সামাজিক স্থিতিশীলতা এবং তরুণ প্রজন্মের ইতিবাচক ভূমিকার প্রতিফলন।
ড. ইউনূসের বক্তব্যে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে এক আশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি ফুটে উঠেছে। তরুণ প্রজন্মের অগ্রযাত্রা এবং অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রমের সফলতা ভবিষ্যতে দেশের জন্য আরও বড় অর্জন নিয়ে আসবে বলে তিনি মনে করেন।