দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে জয়পুরহাটে চালু হওয়া ‘একটু সুখের বাজার’ ক্রেতাদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। জেলা সার্বজনীন কেন্দ্রীয় শিব মন্দির কমিটির উদ্যোগে পরিচালিত এ বাজারে সবজি বিক্রি করা হচ্ছে বাজার মূল্যের অর্ধেক বা তারও কম দামে।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) বড়দিন উপলক্ষে এ বাজারে ছিল ১০০ টাকায় ছয় রকমের সবজির ব্যাগ ভর্তি বিশেষ কম্বো অফার। এতে নতুন আলু ৫০০ গ্রাম, বেগুন ১ কেজি, মুলা ১ কেজি, শিম ৫০০ গ্রাম, নতুন পেঁয়াজ ৫০০ গ্রাম এবং একটি ফুলকপি দেওয়া হয়। এ ধরনের বিশেষ অফার সপ্তাহে অন্তত দুবার দেওয়া হয়, যা ক্রেতাদের আকর্ষণ করে।
গত ২৭ অক্টোবর জয়পুরহাট জেলা সার্বজনীন কেন্দ্রীয় শিব মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাজ কুমার খেতান ‘একটু সুখের বাজার’ চালু করেন। শুরুতে এটি শুধু নিম্ন ও স্বল্পআয়ের মানুষের জন্য সীমিত ছিল। তবে প্রয়োজন ও চাহিদার কারণে এটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে।
প্রথমে মন্দির চত্বরে পরিচালিত হলেও ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় এবং সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য বাজারটি মন্দির মার্কেটে স্থানান্তর করা হয়। প্রতিদিন প্রায় ৫০০ জন ক্রেতা এখানে তাদের প্রয়োজনীয় সবজি কিনতে আসেন। বিশেষ অফারের দিনগুলোতে ক্রেতার সংখ্যা আরও বেড়ে যায়, যা নারী-পুরুষের দীর্ঘ সারির সৃষ্টি করে।
এ বাজারে নতুন আলু, পটোল, বেগুন, করলা, টমেটো, সিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, কাঁচামরিচ, কাঁচকলা, মিষ্টি লাউ, লাল শাক, পালং শাকসহ নানা ধরনের শাকসবজি বিক্রি করা হয়। সবজির দাম বাজার মূল্যের অর্ধেক হওয়ায় ক্রেতারা এখান থেকে তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজি কিনতে পারেন।
বাজারটি ক্রেতাদের কাছে প্রশংসিত হয়েছে। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে বাজারে সবজির দাম কিছুটা কমায় ক্রেতার সংখ্যা কিছুটা হ্রাস পেয়েছে, তবে আয়োজকরা এটিকে ইতিবাচক দিক হিসেবে দেখছেন।
জেলা সার্বজনীন কেন্দ্রীয় শিব মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাজ কুমার খেতান জানিয়েছেন, “যতদিন বাজার পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক না হবে, ততদিন ‘একটু সুখের বাজার’ চালু থাকবে। আমাদের লক্ষ্য আগামী রমজান মাস পর্যন্ত এ কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া।”
‘একটু সুখের বাজার’ উদ্যোগটি জেলার নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্য একটি আশীর্বাদস্বরূপ। ভর্তুকিমূল্যে সবজি বিক্রির এ কার্যক্রম শুধুমাত্র একটি বাজার নয়, বরং এটি মানুষের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সেবামূলক উদ্যোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে।