বাংলাদেশে সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তারের পর ভারত সরকার বাংলাদেশের সংখ্যালঘু পরিস্থিতি নিয়ে সরব হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) ভারতের লোকসভায় বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি, বিশেষ করে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর কথিত হামলার অভিযোগ নিয়ে আলোচনা হয়।
ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, লোকসভায় বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা এবং মন্দির ও প্রতীমা ভাঙচুরের ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা ভারত সরকারের কাছে জানতে চান, এই ইস্যুতে কি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
ভারতীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কীর্তি বর্ধন সিং সংসদে বলেন, “গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে হিন্দু মন্দির ও প্রতীমা ভাঙচুরের কিছু ঘটনা শোনা গেছে। ভারত সরকার এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ সরকারের কাছে হিন্দু মন্দির এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রার্থনাস্থলের নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, সাম্প্রতিক ঘটনায় তাঁতিবাজার পূজামণ্ডপে হামলা এবং সাতক্ষীরার কালী মন্দির থেকে সোনার মুকুট চুরির ঘটনাও আলোচনায় এসেছে।
সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তার এবং এর প্রেক্ষাপটে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বৈঠক করেছেন। তারা বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর কথিত নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে আলোচনা করেন।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও এটিকে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের বিষয় বলে উল্লেখ করেছেন। বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় দেওয়া বক্তৃতায় তিনি বলেন, “বাংলাদেশ একটি ভিন্ন দেশ। এটি আমাদের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে না। আমরা দুঃখ পেলেও কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত মেনেই কাজ করব।”
তিনি আরও জানান, ইসকন প্রতিনিধিদের সঙ্গে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন। তবে সেই আলোচনার বিস্তারিত প্রকাশ করেননি।
বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ইস্যুতে ভারতের এই তৎপরতা দুই দেশের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্কের ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। ভারতের অবস্থান বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য ইতিবাচক হলেও দুই দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ নিয়ে কূটনৈতিক আলোচনা আরও গভীর হতে পারে।