মালদ্বীপে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের সাঁড়াশি অভিযান চলছে, যা প্রতিদিনই আরও জোরদার হচ্ছে। সম্প্রতি রাজধানী মালের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ২১ জনেরও বেশি অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে অধিকাংশই বাংলাদেশি। দেশটির অভিবাসন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, মালদ্বীপে বৈধ ও অবৈধ মিলে বর্তমানে প্রায় লাখেরও বেশি বাংলাদেশি কাজ করছেন। প্রতি বছর এই সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের কারণে বৈধ ও অবৈধ উভয় প্রবাসীই বর্তমানে চাপের মুখে রয়েছেন।
অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে মালদ্বীপ সরকার একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম চালু করেছে। স্থানীয়রা এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে অভিযোগ জানিয়ে প্রবাসীদের আইনের আওতায় আনতে সহযোগিতা করছে। চালুর পর থেকে এ পর্যন্ত প্ল্যাটফর্মে এক হাজারেরও বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে। এর ফলে অবৈধ অভিবাসীদের চিহ্নিত করা সহজতর হয়েছে এবং প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারছে।
মালদ্বীপে বসবাসরত প্রবাসীদের প্রতি সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ হাইকমিশন। বিশেষ করে যারা অবৈধভাবে বসবাস করছেন বা ভিসার শর্ত লঙ্ঘন করে কাজ করছেন, তাদের প্রতি আরও বেশি সতর্ক হওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার মো. সোহেল পারভেজ প্রবাসীদের অনুরোধ জানিয়েছেন, যেন তারা বাংলাদেশি অভিবাসী আইন মেনে চলেন এবং ভিসার বাইরে কোনো ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য বা অন্য কোনো কাজে যুক্ত না হন।
মালদ্বীপ প্রশাসনের কঠোর উদ্যোগের অংশ হিসেবে ২০২৪ সালে দেশটি থেকে ৫,৬০০ জনেরও বেশি অভিবাসীকে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগই বাংলাদেশি। এই কঠোর অবস্থান মালদ্বীপের অভিবাসন ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করার পাশাপাশি অবৈধ অভিবাসন প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। প্রবাসীদের জন্য এটি একটি সতর্কবার্তা, বিশেষত যারা বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই সেখানে বসবাস করছেন বা কাজ করছেন।
এই পরিস্থিতিতে প্রবাসীদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন এবং স্থানীয় আইন মেনে চলার মাধ্যমে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। হাইকমিশন বারবার তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যেন তারা অবৈধ কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকেন এবং স্থানীয় আইন মেনে চলেন।