মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান ও গজারিয়া উপজেলার দুই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার দুপুরে এবং গতকাল মঙ্গলবার রাতে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত দুই চেয়ারম্যান হলেন, সাইফুল ইসলাম (৫৭): সিরাজদিখান উপজেলার বাসাইল ইউপির চেয়ারম্যান এবং সিরাজদিখান উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য। শফিউল্লাহ শফিক (৭৭): গজারিয়া ইউপির চেয়ারম্যান, বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং গজারিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি।
সিরাজদিখান থানার পুলিশের গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আজ বেলা পৌনে একটার দিকে সিরাজদিখান উপজেলার ইমামগঞ্জে অভিযান চালানো হয়। বাসাইল ইউনিয়ন পরিষদের সামনে থেকে ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ জানায়, সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় একটি হত্যাচেষ্টার মামলা রয়েছে। মামলাটি করেছেন মো. মঞ্জিল মোল্লা, যিনি ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গুলিতে আহত হন।
সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খন্দকার হাফিজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গ্রেপ্তারের পর সাইফুল ইসলামকে মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
গতকাল দিবাগত রাত দুইটার দিকে ঢাকার মুগদা এলাকার নিজ বাসা থেকে শফিউল্লাহ শফিককে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা আটক করেন। পরে তাঁরা মুগদা থানা-পুলিশকে খবর দেন। মুগদা থানা-পুলিশ শফিউল্লাহ শফিককে গ্রেপ্তার করে এবং পরে মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়।
পুলিশ জানায়, শফিউল্লাহ শফিককে মুন্সিগঞ্জের একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে তাঁর পরিবারের সদস্যরা গ্রেপ্তারের সঠিক কারণ সম্পর্কে কিছু জানেন না এবং এ ঘটনায় তাঁরা আতঙ্কিত।
শফিউল্লাহ শফিক মুন্সিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং মুন্সিগঞ্জ-৩ (সদর-গজারিয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মৃণাল কান্তি দাসের আস্থাভাজন নেতা হিসেবে পরিচিত। তিনি পরপর দুবার গজারিয়া ইউপির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
মুন্সিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর-গজারিয়া সার্কেল) মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন জানান, মুগদার বাসা থেকে শফিউল্লাহকে গ্রেপ্তার করার পর মুন্সিগঞ্জ সদর থানার পুলিশের একটি দল তাঁকে নিয়ে আসে। আজ দুপুরে তাঁকে মুন্সিগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়েছে।
সাইফুল ইসলাম এবং শফিউল্লাহ শফিকের গ্রেপ্তারের ঘটনায় মুন্সিগঞ্জ জেলায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ এবং মামলার পরবর্তী অগ্রগতি নিয়ে জনমনে ব্যাপক আলোচনা চলছে।