যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (সিআইএ) তাদের অজ্ঞাতসংখ্যক কর্মীকে বরখাস্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে। মূলত সংস্থাটির রিক্রুটিং ও ডাইভারসিটি সংক্রান্ত কার্যক্রমে নিয়োজিত কর্মীদেরই এ ছাঁটাইয়ের আওতায় আনা হচ্ছে। সিআইএর সাবেক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সংস্থাটির ইতিহাসে এটি কর্মী ছাঁটাইয়ের অন্যতম বড় ঘটনা হতে পারে।
দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের জনশক্তিতে বৈচিত্র্যের (ডাইভারসিটি) প্রচেষ্টা নিষিদ্ধ করে একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেন। সিআইএর কর্মী ছাঁটাইয়ের এ উদ্যোগকে ট্রাম্পের সেই আদেশের প্রতিফলন হিসেবে দেখা হচ্ছে।
গত শুক্রবার থেকে বাধ্যতামূলক প্রশাসনিক ছুটিতে থাকা কর্মকর্তাদের ডাকতে শুরু করে সিআইএ এবং তাঁদের পদত্যাগ করতে বলা হয়, অন্যথায় বরখাস্তের সম্মুখীন হতে হবে বলে জানানো হয়। তবে দ্রুতই এ পদক্ষেপ স্থগিত করেন একটি ফেডারেল আদালত। আগামী সোমবার ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্ট অব ভার্জিনিয়ার একজন বিচারক এই ছাঁটাই কার্যক্রমের ওপর সাময়িক স্থগিতাদেশ দেওয়ার বিষয়ে শুনানি করবেন।
সিআইএর পরিচালক জন র্যাটক্লিফ হোয়াইট হাউসের নির্বাহী আদেশ অনুসারে আরও কর্মী ছাঁটাইয়ের উদ্যোগ নিতে পারেন বলে আদালতে দাখিল করা নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে। সরকারি কৌঁসুলিরা যুক্তি দিয়েছেন, ছাঁটাই কার্যক্রম আটকানো হলে তা জনস্বার্থের ক্ষতি করবে এবং র্যাটক্লিফের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে।
কর্মীদের পক্ষের আইনজীবী কেভিন ক্যারল জানিয়েছেন, সিআইএ বর্তমানে প্রায় ৫১ জন কর্মকর্তার পদ পর্যালোচনা করছে। ছাঁটাইয়ের মুখে থাকা এসব কর্মকর্তা মূলত ডাইভারসিটি ও রিক্রুটিং সংক্রান্ত বিষয়ে কাজ করতেন। তিনি আরও বলেন, বরখাস্তের শিকার ব্যক্তিরা কেউই কেবল ডাইভারসিটি বিশেষজ্ঞ নন; বরং তাঁদের নিয়োগ ও ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা রয়েছে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের সময় তাঁদের এসব পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।
সর্বশেষ ১৯৭৭ সালে প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার সিআইএর গোপন তৎপরতা সীমিত করার নির্দেশ দেন, যার ফলে সংস্থাটির তৎকালীন পরিচালক স্ট্যানসফিল্ড টার্নার ১৯৮ জন কর্মীকে বরখাস্ত করেন। তবে তখনও ছাঁটাই প্রক্রিয়া কিছুটা সতর্কতার সঙ্গে পরিচালিত হয়েছিল এবং অবসরের উপযুক্ত কর্মীদের এ প্রক্রিয়ার বাইরে রাখা হয়েছিল।
সিআইএর ছাঁটাই কার্যক্রম স্থগিত রাখার বিষয়ে আদালতের রায় আগামী সোমবার ঘোষণা করা হবে। ইতোমধ্যে কিছু কর্মকর্তা আশাবাদী যে সংস্থা ডাইভারসিটি সংক্রান্ত ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে এবং তাঁরা তাঁদের পূর্ববর্তী দায়িত্বে ফিরে যেতে পারবেন।