যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত নথিপত্রহীন ২০ হাজার ভারতীয়কে ফেরত নিতে নরেন্দ্র মোদি সরকার কোনো আপত্তি জানাবে না। বরং নতুন প্রশাসনের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপন এবং বৈধ অভিবাসনের সুযোগ বাড়ানোর লক্ষ্যে ভারত সরকার এই বিষয়ে সহযোগিতা করবে।
২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১ হাজার ৫২৯ জন অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীকে ফেরত পাঠানো হয়েছে এবং ভারত তাদের গ্রহণ করেছে। ভারতের সরকারি সূত্র জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তের প্রতি কোনো আপত্তি তোলা হয়নি। বরং দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার ভিত্তিতেই এই প্রক্রিয়া চলছে।
যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ২ লাখ ২০ হাজার ভারতীয় অবৈধভাবে বসবাস করছেন। এর মধ্যে ২০ হাজার ৪০৭ জনের কাছে কোনো বৈধ নথি নেই। এই ব্যক্তিদের অনেকেই ইতিমধ্যেই বিতাড়নের তালিকায় রয়েছেন এবং কেউ কেউ আইসিই-এর (ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট) আটক কেন্দ্রে বন্দী।
ভারত সরকারের এক ঊর্ধ্বতন সূত্র জানিয়েছে, নতুন প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক সুদৃঢ় করাই ভারতের লক্ষ্য। পাশাপাশি, বৈধ অভিবাসনের পথ আরও সুগম করতে ভারত এই পদক্ষেপ নিচ্ছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল জানিয়েছেন, অভিবাসন বিষয়ে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র সবসময়ই সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করে। অবৈধ অভিবাসীদের চিহ্নিত করার বিষয়ে উভয় দেশ একমত।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্সাস ব্যুরোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে প্রায় ৫০ লাখ ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্যক্তি বসবাস করেন। এর মধ্যে ৩৪ শতাংশ জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব পেয়েছেন। তবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের নিয়ম পরিবর্তনের পরিকল্পনা করছেন। যদি এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয় এবং পূর্বে নাগরিকত্ব পাওয়া ব্যক্তিদের অবৈধ ঘোষণা করা হয়, তবে ভারতের ওপর অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক চাপ বাড়তে পারে।
রণধীর জয়সোয়াল উল্লেখ করেছেন, ২০২৪ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিমানভর্তি অবৈধ ভারতীয়দের দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। এতে দুই দেশের সহযোগিতার মাত্রা স্পষ্ট হয়েছে।
ভারত সরকারের বর্তমান নীতি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার পাশাপাশি বৈধ অভিবাসনের সুযোগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করছে। তবে অবৈধ অভিবাসনের ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। এই পদক্ষেপ দুই দেশের অভিবাসন ব্যবস্থায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।