রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকায় অবস্থিত সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবন আজ রোববার ১০ দিন পর খুলে দেওয়া হয়েছে। গত ২৫ ডিসেম্বর রাতে এ ভবনে আগুন লাগার পর নিরাপত্তার স্বার্থে ভবনের বেশ কিছু অংশ বন্ধ রাখা হয়েছিল।
নয়তলা বিশিষ্ট ভবনে আগুনের কারণে ছয় থেকে নয় তলা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে পাঁচতলা অক্ষত থাকায় সেসব তলায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা অফিস করছেন। পুড়ে যাওয়া তলায় থাকা মন্ত্রণালয়গুলোর কার্যক্রম সচিবালয়ের বাইরে অস্থায়ীভাবে স্থানান্তর করা হয়েছে।
এদিন সবকিছু স্বাভাবিক হয়নি বলে একাধিক কর্মকর্তা জানান। ভবনের ভিতর এখনও নিরাপত্তা ব্যবস্থা শিথিল করা হয়নি। কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সংযোগ এখনও চালু করা হয়নি এবং লিফট বন্ধ রাখা হয়েছে। পুরো ভবনে পোড়া গন্ধ ছড়িয়ে রয়েছে, যা কয়েক দিন সময় নেবে স্বাভাবিক হতে।
আগুন লাগার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি জানিয়েছে, নাশকতার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বৈদ্যুতিক ‘লুজ কানেকশন’ বা দুর্বল বিদ্যুৎ সংযোগের কারণে আগুনের সূত্রপাত হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা গোটা ভবন ঘিরে রাখেন এবং গাড়ি প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তবে আজ থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গাড়ি সচিবালয়ের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়েছে।
আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের ৬-৯ তলায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম পরিচালিত হতো। এসব মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এখন সচিবালয়ের বাইরে তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছেন। ক্ষতিগ্রস্ত তলায় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার বিভাগ এর একাংশের কার্যালয় ছিল।
সচিবালয়ের গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হামিদুর রহমান খান আজ ৭ নম্বর ভবন পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের জানান, আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি তলার সংস্কার করতে ১০ থেকে ১২ দিন সময় লাগবে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের এক উপসচিব জানান, তাঁর কক্ষে সব নথি সঠিকভাবে পেয়েছেন, তবে প্রায় দুই সপ্তাহ বন্ধ থাকার কারণে কিছু অপরিষ্কার রয়েছে। কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট সংযোগের অভাবে কাজ করা যাচ্ছে না। একইভাবে, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কর্মকর্তা জানালেন, প্রতিটি কক্ষে আগুনের পোড়া গন্ধ এবং কম্পিউটার সংযোগ না থাকায় কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছে।
এছাড়া, পানির সরবরাহও স্বাভাবিক হয়নি বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।