রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সম্প্রতি পশ্চিমা দেশগুলোর বিরুদ্ধে সরাসরি সামরিক শক্তির হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, রাশিয়ার কাছে রয়েছে আরও শক্তিশালী ও অত্যাধুনিক অস্ত্র। তিনি দাবি করেন, ইউক্রেনকে সরবরাহ করা পশ্চিমা দেশগুলোর অস্ত্রের চেয়ে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর কাছে আরও দীর্ঘপাল্লার এবং শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) কাজাখস্তানের রাজধানী আস্তানায় কালেক্টিভ সিকিউরিটি ট্রিটি অর্গানাইজেশনের (সিএসটিও) শীর্ষ সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে পুতিন বলেন, “রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার উৎপাদন ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর সম্মিলিত উৎপাদনের চেয়ে দশগুণ বেশি। আগামী বছর এই উৎপাদন আরও ২৫-৩০ শতাংশ বাড়ানো হবে।”
পুতিন আরও উল্লেখ করেন, রাশিয়ার স্বল্প পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ‘ইস্কান্দার’ যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি ‘এটিএসিএমএস’ (আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেম)-এর তিন সংস্করণের সমান। তিনি আরও দাবি করেন, নতুন আমেরিকান প্রিসিশন স্ট্রাইক মিসাইল সিস্টেমও বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে রাশিয়ার অস্ত্রের চেয়ে উন্নত নয়।
চলতি মাসের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স ইউক্রেনকে দূরপাল্লার অস্ত্র সরবরাহ করার অনুমতি দেয়। এই অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ব্রিটিশ ‘স্টর্ম শ্যাডো’, ফরাসি ‘এসসিএএলপি’ এবং আমেরিকান ‘এটিএসিএমএস’। তবে পুতিনের মতে, ইউক্রেনকে সরবরাহ করা এই অত্যাধুনিক অস্ত্র যুদ্ধক্ষেত্রের পরিস্থিতি পরিবর্তন করতে পারবে না। তিনি দাবি করেন, “রাশিয়া দূরপাল্লার অস্ত্র উৎপাদনে পশ্চিমাদের ছাড়িয়ে গেছে।”
রাশিয়ার অস্ত্রাগারে ইতিমধ্যে ‘কালিবার’ ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, ‘কিনঝাল’ এবং ‘জিরকন’ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। পুতিন জানান, এগুলোর বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে বিশ্বে কোনো সমতুল্য অস্ত্র নেই। “এই অস্ত্রগুলোর উৎপাদন এখন পুরোদমে চলছে এবং আরও বাড়ানো হচ্ছে,” বলেন তিনি।
পুতিন আরও প্রতিশ্রুতি দেন, রাশিয়ার অস্ত্রাগারে ভবিষ্যতে নতুন অত্যাধুনিক হাইপারসনিক সিস্টেম যোগ করা হবে।
পুতিন দাবি করেন, রাশিয়া জানে তাদের সম্ভাব্য প্রতিপক্ষের কাছে কতগুলো অস্ত্র রয়েছে, সেগুলো কোথায় অবস্থিত এবং কতগুলো সরবরাহের পরিকল্পনা রয়েছে। “আমাদের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিটি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে,” বলেন তিনি।
পশ্চিমা অস্ত্রের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে পুতিন বলেছেন, রাশিয়ার সামরিক সক্ষমতা এবং উৎপাদন ক্ষমতা প্রমাণ করছে যে, তাদের প্রযুক্তি এবং সামরিক নীতির ভিত্তি পশ্চিমাদের থেকে অনেক এগিয়ে।