রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে নীতিনির্ধারণের সঙ্গে জড়িত কেন্দ্রগুলোতে হামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, রাশিয়ার নতুন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ওরেশনিক ব্যবহার করে এই আক্রমণ চালানো হতে পারে। শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) বিবিসি তাদের অনলাইন প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের জ্বালানি স্থাপনায় রুশ বাহিনী রাতভর তীব্র হামলা চালায়। এই হামলার কারণে অন্তত ১০ লাখ ইউক্রেনীয় নাগরিক বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। হামলায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া না গেলেও ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
পুতিনের মতে, ইউক্রেনের এই হামলা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরবরাহকৃত এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রুশ ভূখণ্ডে আঘাত হানার প্রতিক্রিয়া। ২০২২ সালে যুদ্ধ শুরুর পর প্রথমবারের মতো ইউক্রেন এই ধরনের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে হামলা চালিয়েছে।
ওরেশনিক ক্ষেপণাস্ত্র সম্পর্কে পুতিন বলেন, এটি শব্দের গতির ১০ গুণ (ম্যাক ১০) গতিতে চলতে সক্ষম। প্রতি সেকেন্ডে আড়াই থেকে তিন কিলোমিটার অতিক্রম করতে পারে এবং বর্তমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলো এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে অক্ষম। তিনি আরও জানান, ইউক্রেনের জ্বালানি স্থাপনাগুলোর ওপর হামলায় রাশিয়ার ৯০টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ১০০টি ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে।
রুশ সামরিক বিশেষজ্ঞ ইলিয়া ক্রামনিক জানান, ওরেশনিক মধ্যম-পাল্লার নতুন প্রজন্মের ক্ষেপণাস্ত্র। এর পাল্লা ২,৫০০ থেকে ৫,০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। এটি ব্যবহারে রাশিয়া যুদ্ধক্ষেত্রে একটি কৌশলগত সুবিধা অর্জন করেছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার এই হামলাকে ব্ল্যাকমেইলের প্রচেষ্টা হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “ইউক্রেন এর কড়া জবাব দেবে।” তিনি রাশিয়ার এ ধরনের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধ শুরুর পর থেকে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাশিয়ার সাম্প্রতিক হামলাগুলো এবং ওরেশনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের হুমকি এই সংঘাতকে আরও তীব্র করে তুলেছে।
বিশ্বজুড়ে এই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। পশ্চিমা শক্তিগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বিবেচনা করছে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দুই পক্ষকে আলোচনার মাধ্যমে সংঘাত নিরসনের আহ্বান জানিয়েছে।