গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর একদমই আড়ালে চলে যান চিত্রনায়িকা নিপুণ। তার দেশের উপস্থিতি এবং বিদেশ যাত্রা নিয়ে একাধিক গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছিল। তবে শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের উদ্দেশ্যে রওনা হতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু হঠাৎ করেই তার যাত্রা আটকে যায়, যা নিয়ে শোবিজ অঙ্গনে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
ইমিগ্রেশন পুলিশের তথ্য মতে, নিপুণ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার বিমানে লন্ডন যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। তবে তার ফ্লাইটের আগে, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) তার বিদেশযাত্রা নিয়ে আপত্তি তোলার পর, তাকে আটক করা হয়। পাসপোর্ট এবং অন্যান্য নথিপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার লন্ডনগামী ফ্লাইট বাতিল করা হয়।
বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশের ওসি মোস্তফা নূরই বাহার জানান, এনএসআই-এর নির্দেশে নিপুণকে আটক করা হয়েছিল এবং পরে তাকে ঢাকায় ফেরত পাঠানো হয়।
নিপুণ নিজে এই ঘটনার পর বলেছিলেন, তিনি কোনো ধরনের আটক বা জিজ্ঞাসাবাদে ছিলেন না এবং বিষয়টি ভুল তথ্য বলে দাবি করেছেন। “আমাকে আটক কিংবা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। এ বিষয়ে আর কোনো মন্তব্য করতে চাই না,”—এমনটাই জানিয়েছেন নিপুণ। তবে তার লন্ডন যাত্রা আটকে দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।
এই ঘটনা শোবিজ অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করেছে। নিপুণ একজন প্রভাবশালী অভিনেত্রী হিসেবে পরিচিত। তিনি প্রায়ই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন দলের অনুষ্ঠান ও প্রচারণায় সক্রিয় ছিলেন। বলা হচ্ছে, তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ সেলিমের ছত্রছায়ায় অনেকটা বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলেন। তার রাজনৈতিক সম্পর্ক এবং চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিতে প্রভাব বিস্তার নিয়ে বিভিন্ন সময় অভিযোগ ওঠেছে।
এমতাবস্থায়, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশ ত্যাগের পর, নিপুণ গ্রেপ্তার আতঙ্কে আত্মগোপনে চলে যান বলে জানা যায়। তার বিদেশ যাত্রার বাতিল হওয়ার বিষয়টি এই রাজনৈতিক অবস্থার সঙ্গে যুক্ত কি না, তা স্পষ্ট নয়।
এখন পর্যন্ত নিপুণের লন্ডন যাত্রা বাতিল এবং এনএসআইয়ের আপত্তি জানানো সম্পর্কে আরো বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে এ ঘটনায় শোবিজ অঙ্গনে তার রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে নানা আলোচনা চলছে, যা ভবিষ্যতে তার ক্যারিয়ারের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।