ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বলেছেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে বিবৃতি দিচ্ছেন, তা ভারত সরকার সমর্থন করে না। এই অবস্থান দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্কে একটি ক্ষুদ্র প্রতিবন্ধক সৃষ্টি করেছে।
বুধবার নয়াদিল্লির সংসদ ভবনের অ্যানেক্স বিল্ডিংয়ে অনুষ্ঠিত হয় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ব্রিফিং। দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা এই ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন ২১ থেকে ২২ জন সংসদ সদস্য।
ব্রিফিং শেষে বিক্রম মিশ্রি ভারতের সংবাদমাধ্যম এবং সংসদ সদস্যদের বিভিন্ন প্রশ্নের মুখোমুখি হন।
ব্রিফিংয়ে বিক্রম মিশ্রি স্পষ্টভাবে জানান, ঢাকার সঙ্গে নয়াদিল্লির সম্পর্ক একক রাজনৈতিক দলের ওপর নির্ভরশীল নয়। বরং ভারত বাংলাদেশের জনগণের প্রতি অগ্রাধিকার দেয়। তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা ভারতে বসে তার রাজনৈতিক মন্তব্য করার জন্য ব্যক্তিগত যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করছেন। ভারত সরকার তাকে কোনো সরকারি প্ল্যাটফর্ম বা সুযোগ দেয়নি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তৃতীয় দেশে হস্তক্ষেপ এড়ানো ভারতের ঐতিহ্যবাহী নীতি।”
ব্রিফিং চলাকালীন কংগ্রেস নেতা শশী থারুর এবং অন্যান্য সংসদ সদস্যরা পররাষ্ট্র সচিবের কাছে জানতে চান, শেখ হাসিনা কোন মর্যাদায় ভারতে অবস্থান করছেন। সংসদ সদস্যদের একাধিক প্রশ্নের জবাবে বিক্রম মিশ্রি বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সাম্প্রতিক কূটনৈতিক আলোচনা এবং নীতিগত অবস্থান ব্যাখ্যা করেন।
ব্রিফিং শেষে শশী থারুর সাংবাদিকদের জানান, “বাংলাদেশের বিষয়ে একটি চমৎকার ব্রিফিং হয়েছে। পররাষ্ট্র সচিব সফরের বিস্তারিত তুলে ধরেছেন। তবে সংসদীয় নীতিমালার কারণে আমি এই বিষয়ে বিশদ আলোচনা করতে পারছি না।”
বিক্রম মিশ্রির বক্তব্যে স্পষ্ট হয়, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক কেবল রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নয়, বরং জনগণের কল্যাণ ও সমর্থনের ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা। দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার ক্ষেত্রে ভারসাম্য রক্ষা এবং অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতি মেনে চলা হবে।
ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিবের বক্তব্যে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যক্রম নিয়ে বিতর্ক এবং দুই দেশের সম্পর্কের জটিলতাগুলি উঠে এসেছে। তবে ভারত সরকার বাংলাদেশে কোনো নির্দিষ্ট দলের পক্ষপাতিত্ব না করে কৌশলগত সম্পর্ক বজায় রাখতে সচেষ্ট থাকবে বলে প্রতীয়মান হয়।