1. [email protected] : Hossain Monir : Hossain Monir
  2. [email protected] : RT BD NEWS : RT BD NEWS
  3. [email protected] : RT BD NEWS :
শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ০৭:১০ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে টেক্সওয়ার্ল্ড অ্যাপারেল মেলা ২০২৫-এ বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো উদ্ভাবনের প্রদর্শনী দেখাল ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ জামায়াত আমির শফিকুর রহমানের ওপেন হার্ট সার্জারি শনিবার সকালে পঞ্চগড় সীমান্তে ভারত থেকে ৯ বাংলাদেশিকে পুশইন পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ-চীন দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদার আগামী কয়েকদিন বজ্রসহ টানা বৃষ্টি, কিছু এলাকায় ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের শঙ্কা পিরোজপুরে জামাল হত্যা মামলায় ৩ জনের যাবজ্জীবন, খালাস পেল ৫ জন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ-আওয়ামী লীগ নেতাদের গোপন বৈঠক: বসুন্ধরায় গ্রেপ্তার ২২ পিরোজপুর মহিলা কলেজে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ’: যোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও স্মৃতিচারণ খুলনার দিঘলিয়ায় ধর্ষিতা কন্যা ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা, ধর্ষক পলাতক

সরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি প্রক্রিয়া বন্ধ: চরম ভোগান্তিতে দুই লক্ষাধিক শিক্ষক

মেহেদী হাসান
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারি, ২০২৫
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক

গত ১৯ দিন যাবত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বদলি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রায় দুই লক্ষাধিক বদলি-প্রত্যাশী শিক্ষক-শিক্ষিকা। বিশেষ করে নারী শিক্ষকদের ওপর এর প্রভাব পড়েছে বেশি। পরিবার থেকে দূরে কর্মস্থলে নিয়মিত যাতায়াত করতে গিয়ে তারা শারীরিক ও মানসিকভাবে চরম অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন।

গত ২৬ ডিসেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব রেবেকা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক আদেশে জানানো হয়, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের অফলাইন বদলি, প্রশাসনিক বদলি ও সংযুক্তি কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে। এ নির্দেশনা অনুযায়ী, গত ১ জানুয়ারি থেকে অনলাইন সফটওয়্যারের মাধ্যমে আন্তঃউপজেলা বা আন্তঃথানায় বদলি কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখনো পর্যন্ত এই প্রক্রিয়াও বাস্তবায়িত হয়নি।

বদলি প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন নারী শিক্ষকরা। অনেকেই পরিবার থেকে শত কিলোমিটার দূরে কর্মস্থলে কাজ করছেন। সিরাজগঞ্জের সহকারী শিক্ষক ইসরাত জাহান বলেন, “সহকারী শিক্ষক হিসেবে আমার চাকরির বয়স ১০ বছরেরও বেশি। তা-ও বদলি হতে পাচ্ছি না।” একইভাবে বগুড়ার হোসেনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক তানিয়া সুলতানার কথায়, “বাসা থেকে বিদ্যালয়ের দূরত্ব ৮৫ কিলোমিটার। প্রতিদিন এই পথ পাড়ি দিতে আমাকে বাসে, হেঁটে ও সিএনজি অটোতে যাতায়াত করতে হয়। দুই শিশুসন্তানকে বাসায় রেখে দিনভর কষ্ট করতে হচ্ছে।”

অনলাইনে বদলি প্রক্রিয়া না হওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও শিক্ষকদের ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যাচ্ছে। শীলা আক্তার নামের এক শিক্ষিকা ফেসবুকে লেখেন, “দেশে সব কার্যক্রম চলছে, শুধু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বদলি কার্যক্রম বন্ধ। শিক্ষকরা কতটা শারীরিক, মানসিক কষ্টে আছেন, তা ভুক্তভোগীরাই জানেন। কর্তৃপক্ষের প্রতি বিনীত আবেদন, দ্রুত বদলি চালু করুন, আমাদেরকে সুস্থভাবে বাঁচার সুযোগ দিন।”

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মন্ত্রণালয়ের একজন শীর্ষ কর্মকর্তার নির্দেশেই বদলি প্রক্রিয়া স্থগিত রাখা হয়েছে। তিনি বিগত সরকারে সুবিধাভোগী ছিলেন এবং বর্তমান সরকারের সমর্থিত শিক্ষকদের বদলি প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার জন্যই এমন নির্দেশ দিয়েছেন। মন্ত্রণালয়ের তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের (আইএমডি) একজন কর্মকর্তা বলেন, “অনলাইনে বদলি কার্যক্রম শুরু করতে তিনবার পাইলটিং তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল, কিন্তু অনুমতি না পাওয়ায় তা পিছিয়ে গেছে।”

বাংলাদেশ সহকারী প্রাথমিক শিক্ষক সমাজের নেতারা জানিয়েছেন, দেশের প্রায় ৬৫ হাজার ৫৬৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৫১৩ জন শিক্ষকের মধ্যে অর্ধেকের বেশি বদলি প্রত্যাশী। দীর্ঘদিন ধরে বদলি হতে না পারায় শিক্ষকদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। তারা জানান, অনেক শিক্ষক দম্পতির কর্মস্থল একে অপরের থেকে শত কিলোমিটার দূরে হওয়ায় সংসারজীবনেও বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।

অফলাইন বদলি প্রক্রিয়ার সময় ঘুষ লেনদেনের অভিযোগও উঠেছে। অনেক শিক্ষকের অভিযোগ, পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকার বিনিময়ে কিছু শিক্ষককে বদলি করা হয়েছে, যেখানে অন্যান্য যোগ্য শিক্ষকেরা শর্ত পূরণ করেও বদলি হতে পারেননি। অনলাইনে বদলি প্রক্রিয়া চালু করার মূল উদ্দেশ্য ছিল এসব দুর্নীতি রোধ করা। কিন্তু সেই প্রক্রিয়াও কার্যকর না হওয়ায় শিক্ষকরা আশাহত হয়েছেন।

সারা দেশে শিক্ষকরা এখন বদলি আদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছেন। তাদের বক্তব্য, বদলি প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রমেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। তাড়াতাড়ি এ সমস্যার সমাধান না হলে শিক্ষকদের মানসিক চাপ আরও বাড়বে এবং শিক্ষাঙ্গনে স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত হবে।

সরকারের প্রতি শিক্ষকদের আহ্বান, দ্রুত বদলি প্রক্রিয়া চালু করে তাদের দীর্ঘদিনের কষ্ট লাঘব করা হোক। শিক্ষকদের দাবি, “আমাদেরকে সুস্থভাবে বাঁচার সুযোগ দিন।”

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 𝑹𝑻 𝑩𝑫 𝑵𝑬𝑾𝑺 আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট