ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর মনে করা হয়েছিল, বন্দর এলাকায় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের তাণ্ডব থেমে যাবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, স্থানীয় বিএনপির নেতাদের ম্যানেজ করে নতুন করে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করেছে যুবলীগের নেতারা। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত বন্দর পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী জহির।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, শেখ হাসিনা সরকার পতনের পরও বন্দরে কাজী জহির তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে জমি দখল, চাঁদাবাজি এবং অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
স্বৈরাচার শেখ হাসিনা, মন্ত্রী, ও আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতারা পালিয়ে গেলেও নারায়ণগঞ্জের শীর্ষ গডফাদার শামীম ওসমানের সহযোগী যুবলীগ নেতা কাজী জহির প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
এদিকে হাফেজ আনিছ হত্যা মামলার আসামি কাজী জহিরকে বন্দরের থানা পুলিশের নাকের ডগায় ঘুরতে দেখা গেলেও তাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায়ও কাজী জহিরের সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ১৯ জুলাই নারায়ণগঞ্জের চাষাড়া বঙ্গবন্ধু সড়কে শামীম ওসমানের নেতৃত্বে যে সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়, তাতে উপস্থিত ছিলেন কাজী জহির। ওই হামলায় কাজী জহিরের সহযোগী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা কাইল্ল্যা উজ্জল রাবার বুলেটের গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন।
বন্দর ২২নং ওয়ার্ড এলাকায় কাজী জহিরের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী বাহিনী জমি দখল ও চাঁদাবাজির মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, কাজী জহিরের এসব অপকর্ম চালিয়ে যেতে শামীম ওসমান ছাড়াও আজমীর ওসমান এবং পারভীন ওসমানের সঙ্গেও তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। ফলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হলেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কাজী জহিরের বিরুদ্ধে থানায় জমি দখলের অভিযোগ দেওয়া হলেও পুলিশ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর সাধারণ মানুষ মনে করেছিল কাজী জহিরের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে রেহাই মিলবে। কিন্তু এখনো প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে কাজী জহির ও তার বাহিনী, এবং জমি দখলের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “আমরা পুলিশকে জানিয়েছি। কিন্তু তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। কাজী জহিরের বাহিনী এখনো আমাদের জমি দখল করছে। আমাদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত।”
বন্দর এলাকায় কাজী জহিরের তাণ্ডবের কারণে সাধারণ মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার ফলে যুবলীগ নেতা কাজী জহির আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকার পরিবর্তনের পরও পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার কারণে বন্দরে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে।