মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার নতুন মাত্রা যোগ করেছে ইরানের সামরিক প্রস্তুতি। দেশটি তাদের ভূগর্ভস্থ ক্ষেপণাস্ত্র শহরগুলোতে লঞ্চারে ক্ষেপণাস্ত্র লোড করেছে এবং এগুলো উৎক্ষেপণের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত বলে জানিয়েছে ইরানি সরকার।
রোববার (৩০ মার্চ) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) ইরানি সংবাদমাধ্যম তেহরান টাইমস একটি পোস্টে জানায়, ‘প্যান্ডোরার বাক্স খুললে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের চরম মূল্য দিতে হবে।’
এর আগে, শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) কমান্ডার মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি ঘোষণা করেন, ইরান নতুন ধরনের বিশেষ ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে। পাশাপাশি শিগগিরই ‘নতুন ক্ষেপণাস্ত্র’ ও ‘ড্রোন সিটিস’ (ড্রোন শহর) উদ্বোধন করা হবে। তিনি বলেন, ‘আইআরজিসি অ্যারোস্পেস ফোর্স আধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির প্রকল্প চালিয়ে যাচ্ছে। শিগগিরই আমরা নতুন ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনবাহী সামরিক স্থাপনা উন্মোচন করব, যা ইরানের শক্তির বিশালতা ও গভীরতা প্রকাশ করবে।’
মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক অস্থিরতার কারণে ইরানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়েছে— এমন ধারণা উড়িয়ে দিয়েছেন আইআরজিসি কমান্ডার। তিনি দাবি করেন, ‘আমরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে হাজার হাজার কিলোমিটার দূরে নির্ভুলভাবে লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানোর প্রযুক্তি অর্জন করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই প্রযুক্তি বিশ্বের অর্থনীতি ও শক্তির ভারসাম্য বদলে দিতে পারে।’
জেনারেল সালামি আরও বলেন, সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের সরকারের পতন হলেও ইরানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না। কারণ, ‘ইরান কখনো সিরিয়ায় সামরিক সুবিধা উপভোগ করেনি। আমাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা কোনো বিদেশি শক্তির ওপর নির্ভরশীল নয়।’
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘ইরানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে আমাদের নিজস্ব ভূখণ্ড, সংকল্প, সামরিক সক্ষমতা ও সিদ্ধান্তের ওপর প্রতিষ্ঠিত।’
ইরানের এই সামরিক প্রস্তুতি ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কড়া হুঁশিয়ারির ফলে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন উত্তেজনার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা ইরানের এই পদক্ষেপের কীভাবে জবাব দেবে, তা নির্ধারণ করবে ভবিষ্যতের ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি।