বিদেশে পাড়ি দিয়ে ভালো চাকরি আর সচ্ছল জীবনের স্বপ্ন দেখেছিলেন তারা। কিন্তু সেই স্বপ্ন এখন ভয়াবহ দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর ও মহেশপুর উপজেলার ১২টি পরিবার প্রতারণার শিকার হয়ে আজ নিঃস্ব।
অভিযোগ উঠেছে, কোটচাঁদপুর উপজেলার কাগমারী গ্রামের আদম ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম ও তার কাতারপ্রবাসী ছেলে মাসুম বিল্লাহ মামুন বিদেশে ভালো কাজের প্রলোভন দেখিয়ে প্রতিটি পরিবার থেকে ৪.৫ থেকে ৫ লাখ টাকা আদায় করেন।
ভুক্তভোগীদের পরিবার জানায়, গত বছরের নভেম্বর থেকে তাদের ছেলে ও স্বজনদের কাতারের উম সালাল মোহাম্মদ এলাকায় একটি বাড়িতে গাদাগাদি করে আটকে রাখা হয়েছে। সেখানে নেই বৈধ কাজ, নেই খাবারের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা—উল্টো আরও টাকা না পাঠালে দেশে লাশ ফেরত যাবে বলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
কৃষক মোহাম্মদ হানিফ বলেন, “ছেলেকে পাঠিয়ে সংসার ভালো চলবে ভেবেছিলাম। এখন ওখানে না খেয়ে আছে, আবার বলছে আরও টাকা পাঠাতে।”
বিধবা নুরজাহান বেগম বলেন, “জমি বন্ধক, গরু বিক্রি, এনজিও ঋণ—সব দিয়েছি। এখন দালাল বলছে আবার দুই লাখ টাকা না দিলে কাজ হবে না। আমরা খাবো কী, দেবো কী!”
একাধিক পরিবার থানায় অভিযোগ ও আদালতে মামলা করেছে। কিন্তু অভিযুক্ত নজরুল ইসলাম ও তার পরিবারের সদস্যরা গা ঢাকা দিয়েছে। কাগমারীর বাড়িতে ঝুলছে তালা, বন্ধ মোবাইল ফোন।
কোটচাঁদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কবির হোসেন মাতুব্বর বলেন, “স্থানীয়ভাবে মীমাংসার চেষ্টা করা হয়েছিল। অভিযুক্তরা পলাতক থাকায় তা সম্ভব হয়নি। তাদের আদালতের শরণাপন্ন হতে বলা হয়েছে।”
ভুক্তভোগীরা বলছেন, “আমাদের যা ছিল সব হারিয়েছি। এখন যেন আর কেউ এই দালালদের ফাঁদে পড়ে সর্বনাশ না হয়, সেই জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”