সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার প্রত্যন্ত বিলাঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খদ্দ গজাইল দাখিল মাদ্রাসা। দীর্ঘদিন ধরে অবকাঠামোগত সংকটে নিমজ্জিত এই মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। শ্রেণিকক্ষগুলোর দরজা-জানালা ভাঙা, চালের টিনে বড় বড় ছিদ্র—সব মিলিয়ে এক অমানবিক পরিবেশে শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে।
বৃষ্টি হলেই শিক্ষার্থীরা চরম বিপাকে পড়ে। শ্রেণিকক্ষে টিনের ফুটো দিয়ে পানি পড়ায় বই-খাতা ভিজে যায়। কেউ কেউ মাথার ওপর ছাতা ধরে ক্লাস করতে বাধ্য হয়। এতে শিক্ষার্থীদের মনোযোগ নষ্ট হয়, পড়াশোনার মান কমে যায়। তীব্র গরমের সময় অতিরিক্ত শিক্ষার্থীর চাপে শ্রেণিকক্ষে গরম আরও অসহনীয় হয়ে ওঠে, যার ফলে মাঝেমধ্যে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ে।
বর্তমানে মাদ্রাসাটিতে ২৭০ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। কিন্তু এত শিক্ষার্থীর জন্য নেই বিশুদ্ধ পানির কোনো ব্যবস্থা। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে শিক্ষার্থীরা।
উল্লাপাড়া উপজেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সূত্র জানায়, খদ্দ গজাইল মাদ্রাসায় একটি বহুতল ভবন বরাদ্দ দেওয়া হলেও নির্মাণ শুরুর আগেই মাটি ও অন্যান্য জটিলতার কারণে প্রকল্পটি স্থগিত হয়ে যায়। এরপর থেকে মাদ্রাসার উন্নয়ন কার্যক্রম থেমে আছে।
উপজেলা শিক্ষা প্রকৌশলী রুহুল আমিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “তৎকালীন সময়ে যদি ভবনটি নির্মিত হতো, তাহলে আজ এই দুরবস্থা হতো না। পরবর্তী ধাপে এখানে নতুন করে ভবন নির্মাণের প্রস্তাব পাঠানো হবে।”
মাদ্রাসার সুপার আব্দুল জলিল বলেন, “আমাদের মাদ্রাসায় পাশের হার ও শিক্ষার্থী সংখ্যা অনেক, কিন্তু অবকাঠামো নেই। আমরা যে কী ভয়াবহ পরিবেশে ক্লাস নিচ্ছি, না দেখলে কেউ বুঝবে না। একটি বহুতল ভবন এখন জরুরি প্রয়োজন।”
এ বিষয়ে উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাত বলেন, “মাদ্রাসাটি আপাতত পাঠদানে সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করতে কিছু বরাদ্দ দেওয়া হবে।”
এমতাবস্থায় স্থানীয়রা দ্রুত স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণ ও শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।