ঝিনাইদহের মহেশপুরে প্রকাশিত জাতীয় দুটি দৈনিকে নিজের বিরুদ্ধে প্রকাশিত সংবাদকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মানহানিকর আখ্যা দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক হামিদুর রহমান রানা। রোববার সকালে মহেশপুরের আদর্শ প্রেসক্লাব কার্যালয়ে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে তিনি উক্ত সংবাদের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানান এবং আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দেন।
হামিদুর রহমান রানা অভিযোগ করেন, ২০২৫ সালের ২৯ জুলাই জাতীয় দুটি পত্রিকায় তাঁর বিরুদ্ধে প্রকাশিত প্রতিবেদন সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন এবং পরিকল্পিত অপপ্রচারের অংশ। তিনি বলেন, “এই সংবাদের মাধ্যমে আমার ব্যক্তিগত, পারিবারিক এবং সামাজিক সম্মান ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা করা হয়েছে। এটি একটি কুচক্রী মহলের চক্রান্ত।”
প্রতিবেদন অনুযায়ী তাঁর বিরুদ্ধে চারতলা বাড়ি নির্মাণ, জমি কেনা, সীমান্তে চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ, সরকারি প্রকল্প থেকে কমিশন গ্রহণ এবং সরকারি কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি দেখানোর মতো গুরুতর অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে। এসব অভিযোগকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে রানা বলেন, “আমার নামে মাত্র ৯ শতক ভিটা রয়েছে। এছাড়া আর কোনো জমি আমার নামে নেই।”
তিনি আরও জানান, “আমি যে মোটরসাইকেল ব্যবহার করি, সেটি বৈধভাবে কেনা হয়েছে এবং এখনও ৮২ হাজার টাকা ঋণ পরিশোধ বাকি রয়েছে। এর ক্যাশ মেমো ও অন্যান্য প্রমাণপত্র আমার কাছে রয়েছে।” সংবাদ সম্মেলনে নিজের ব্যক্তিগত জীবনের স্বচ্ছতা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমি দীর্ঘদিন ধরে একটি মসজিদে ইমামতি করছি। মসজিদ কমিটির সভাপতি ও সেক্রেটারি আমার চরিত্র সম্পর্কে ভালো করেই জানেন।”
রানা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “প্রতিবেদন তৈরির সময় আমার কোনো বক্তব্য নেওয়া হয়নি, যা সাংবাদিকতার মৌলিক নীতিমালার সম্পূর্ণ পরিপন্থী।” তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আমার হাতে এখন যে ভাঙা মোবাইল সেটি ছাড়া আর কোনো স্মার্টফোনও নেই।”
তিনি জানান, উক্ত দুটি দৈনিকের বিরুদ্ধে মানহানি ও তথ্য বিভ্রান্তির অভিযোগে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল, ঝিনাইদহ প্রেসক্লাব, ও অন্যান্য সাংবাদিক সংগঠনের কাছেও অভিযোগ জানাবেন বলে ঘোষণা দেন। বিশেষভাবে সীমান্ত অপরাধ সংক্রান্ত অভিযোগের ব্যাপারে রানা জানান, তিনি ঝিনাইদহ সেনানিবাসের কমান্ডারের কাছে লিখিত অভিযোগ পেশ করবেন।
সংবাদ সম্মেলনের শেষ পর্যায়ে হামিদুর রহমান রানা বলেন, “আমার বিরুদ্ধে আনীত যেকোনো অভিযোগ যদি প্রমাণিত হয়, তাহলে আমি দেশের সর্বোচ্চ শাস্তি মাথা পেতে নিতে প্রস্তুত। কিন্তু যারা মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে, তাদেরও প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জ করছি—যদি প্রমাণ দিতে পারে, তাদের পুরস্কৃত করবো।”
তিনি সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যম ও সংবাদদাতার কাছে প্রকাশিত সংবাদের প্রত্যাহার ও সংশোধনের দাবি জানান এবং প্রেস কাউন্সিল ও প্রশাসনের কাছে দোষী সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।