
নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ ২০২৫ এখন এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের অপেক্ষায়। ৪৭ বছরের দীর্ঘ বিশ্বকাপ ইতিহাসে এবারই প্রথম এমন এক ফাইনাল হতে যাচ্ছে যেখানে নেই অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড কিংবা নিউজিল্যান্ড—নারী ক্রিকেটের তিন চিরচেনা পরাশক্তি। তাদের অনুপস্থিতিতে প্রথমবারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৌড়ে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা।
আগামী রবিবার (২ নভেম্বর) ভারতের মুম্বাইয়ে অনুষ্ঠিত হবে বিশ্বকাপের এই রোমাঞ্চকর ফাইনাল। এটাই প্রথমবারের মতো দুটি দলই শিরোপা জয়ের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে।
নারী ক্রিকেটে এতদিন ছিল অস্ট্রেলিয়ার একচ্ছত্র আধিপত্য। ১৯৭৮ থেকে ২০২২ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ১২ আসরের মধ্যে রেকর্ড ৭ বার শিরোপা জিতেছে তারা। ইংল্যান্ড জিতেছে ৪ বার এবং নিউজিল্যান্ড একবার (২০০০ সালে)। কিন্তু এবারের আসরে ভাগ্য অনুকূলে ছিল না কোনো ঐতিহ্যবাহী দলেরই—গ্রুপ পর্বেই বিদায় নেয় নিউজিল্যান্ড, আর সেমিফাইনালে হার মানে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাতে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে রেকর্ড গড়ে পরাজিত করে ভারতীয় নারী দল ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। ৩৩৯ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করে জয় ছিনিয়ে নেয় হারমানপ্রীত কৌরের নেতৃত্বাধীন ভারত। এর মাধ্যমে মাত্র তৃতীয়বারের মতো ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে তারা। আগের দুইবার ফাইনালে হেরে গেলেও এবার শিরোপা জয়ের স্বপ্নে উজ্জীবিত পুরো ভারতীয় দল।
অন্যদিকে, প্রথম সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডকে ১২৫ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠেছে দক্ষিণ আফ্রিকা নারী দল। টুর্নামেন্টজুড়ে ধারাবাহিক পারফরম্যান্সে উজ্জ্বল প্রোটিয়া নারীরা এখন শিরোপার অন্যতম দাবিদার হিসেবে বিবেচিত।
সাম্প্রতিক সময়ে ভারতীয় ক্রিকেটে চলছে সাফল্যের ধারাবাহিকতা। পুরুষ দল জিতেছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ও এশিয়া কাপ। এবার নারী দলও ইতিহাস গড়ার দ্বারপ্রান্তে। অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকা নারী দলও প্রথমবারের মতো বিশ্ব ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠত্ব ছিনিয়ে নিতে প্রস্তুত।
সব মিলিয়ে, নারী ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য ২০২৫ সালের ফাইনাল হতে যাচ্ছে এক ঐতিহাসিক দ্বৈরথ—যেখানে নতুন এক বিশ্বচ্যাম্পিয়নের জন্ম দেখতে প্রস্তুত পুরো ক্রিকেট দুনিয়া।