উত্তরাঞ্চলে শীতের প্রকোপ বাড়ছে। হিমালয়-কাঞ্চনজঙ্ঘার সন্নিকটে অবস্থিত পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় শুরু হয়েছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। শীতের তীব্রতায় কাঁপছে মানুষ।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) ভোর ৬টায় তেঁতুলিয়ায় চলতি শীত মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের সহকারী কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ। তিনি বলেন, “শৈত্যপ্রবাহের কারণে হাড়কাঁপানো ঠাণ্ডা অনুভূত হচ্ছে। আজকের তাপমাত্রা গতকালের তুলনায় সামান্য বেড়েছে, তবে সামনের দিনগুলোতে এটি আরও কমতে পারে।”
এর আগে শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) তা নেমে গিয়েছিল ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রিতে।
তীব্র ঠাণ্ডায় বিপাকে পড়েছেন তেঁতুলিয়ার চা, পাথর, কৃষি শ্রমিক ও স্বল্প আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। ঠাণ্ডা বাতাস থেকে বাঁচতে অনেকে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। দিনের বেলায় তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও সন্ধ্যা থেকে রাতের ঠাণ্ডা আবারও তীব্র আকার ধারণ করছে।
শীতের কারণে কষ্টে দিন পার করছেন জেলার হতদরিদ্র মানুষ। অনেক পরিবার শীতবস্ত্রের অভাবে বালিশ, পুরোনো কাপড় এবং খেজুরপাতার কুড়ানো চাদর দিয়ে রাত কাটাচ্ছেন।
তীব্র শীতে বেড়েছে শীতজনিত বিভিন্ন রোগ। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতাল ও আশপাশের স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে বাড়ছে রোগীর ভিড়। শিশু ও বয়স্করা সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া এবং ডায়রিয়ার মতো রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানান, “শীতের কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে গেছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের বেশি সমস্যা হচ্ছে। চিকিৎসা সেবা চালু রাখতে হাসপাতালগুলোতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
উত্তরের এই শীতপ্রবাহে দরিদ্র মানুষদের পাশে দাঁড়াতে সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সাহায্য সংস্থার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে শীতবস্ত্র বিতরণ এবং স্বাস্থ্যসেবায় বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন।