বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) এর ১১তম আসরের দামামা বেজে উঠেছে। মাঠে ক্রিকেটারদের চূড়ান্ত প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। তবে এই প্রস্তুতির মাঝে সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতি বড় একটি আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাকিব, যিনি সবসময়ই বাংলাদেশের ক্রিকেটের অবিচ্ছেদ্য অংশ, এই বিপিএলে খেলবেন কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এর পেছনে মূল কারণ হলো তার রাজনৈতিক অবস্থান ও বিভিন্ন মামলায় জড়িত থাকা।
গেল আগস্টে রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হওয়ার পর সাকিব দেশে ফিরতে পারেননি, এবং আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হওয়ায় তার বিরুদ্ধে নানা মামলা হয়েছে। যার ফলে ১১তম বিপিএলে তার না খেলার সম্ভাবনা বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে। সাকিব না থাকায় তার ভক্তদের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে। গেল বিপিএলে রংপুর রাইডার্সের হয়ে খেললেও, এবার তাকে দলে ভিড়িয়েছে চিটাগাং কিংস। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি খেলবেন কিনা, সেটি এখনও অনিশ্চিত। সাকিবের অনুপস্থিতি নিয়ে ঢাকা ক্যাপিটালসের প্রধান কোচ ও বিসিবির সাবেক পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজন দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
সুজন বলেন, “সারা দেশে সাকিবিয়ান তো অনেক। তাতে সে না থাকায় দর্শকদের আগ্রহে একটু তো প্রভাব ফেলবেই। সাকিব আমাদের সেরা ক্রিকেটার, এটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তার অনুপস্থিতি আমাদের জন্য হতাশার।” তিনি আরও বলেন, “সাকিব সারা জীবন ক্রিকেট খেলবে না, তবে যত দিন খেলে যাচ্ছে, এই সময়ে বাংলাদেশের ক্রিকেট খেলতে পারছে না, এটা আমাদের জন্য একটা ব্যর্থতা মনে করি।”
লিটন দাসের ক্ষেত্রে সুজন কিছুটা হতাশা প্রকাশ করেছেন। “ফর্ম ইজ টেম্পোরারি, ক্লাস ইজ পার্মানেন্ট” এই কথা দিয়ে সুজন লিটন দাসের প্রতি তার বিশ্বাস প্রকাশ করেন। তবে, লিটন দীর্ঘদিন ক্রিকেট খেলেও তার নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি বলে মন্তব্য করেন তিনি। সুজন মনে করেন, লিটন সম্ভবত মানসিক চাপের কারণে তার সেরাটা দিতে পারছেন না। তবে তিনি আশাবাদী যে, যদি লিটন মৌলিক বিষয়গুলিতে মনোযোগী হতে পারেন, তবে তিনি আবার তার সেরাটা ফিরে পেতে পারেন।
জাতীয় দলের প্রধান কোচ হিসেবে বিদেশি কোচ নিয়োগের ব্যাপারে তামিম ইকবালের মতের সাথে ভিন্নমত পোষণ করেছেন সুজন। তিনি মনে করেন, দেশি কোচদের প্রস্তুতি নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। সুজন বলেন, “বিদেশি কোচরা এ দেশে আসে, তারা কতটুকু প্রস্তুত? তারা যে এই দেশে আসে, তারা কতটুকু তৈরি হয়ে আসে? বাংলাদেশিরা কেন পারবে না?” সুজনের মতে, কোচিংয়ের ভাষা একই, এবং দেশি কোচরাও বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নতি করতে সক্ষম।
২০১৩ সালের বিপিএলে চিটাগাং কিংসের হয়ে খেলেছিলেন অস্ট্রেলিয়ান পেসার শেন টেইট। এবার তিনি চিটাগাং কিংসের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। পেস বোলিংয়ের প্রতি তার দৃষ্টি রয়েছে, বিশেষভাবে রংপুর রাইডার্সের পেসার নাহিদ রানের প্রতি। টেইট বলেন, “পাকিস্তানে সে যখন সিরিজ খেলেছিল তখন আমি তাকে টিভিতে দেখেছি। তার খুব লম্বা এবং শক্তিশালী শারীরিক গঠন রয়েছে, যা বাংলাদেশের ক্রিকেটে রোমাঞ্চকর একটি বিষয়।” তিনি নাহিদ রানার আরও যত্ন নিতে এবং তার প্রতিভাকে সঠিকভাবে পরিচর্যা করতে আহ্বান জানিয়েছেন।
এছাড়া সুজনের বক্তব্যে একদিকে সাকিবের অনুপস্থিতির হতাশা তো রয়েছেই, অপরদিকে, লিটন ও নাহিদের মতো খেলোয়াড়দের নিয়ে ভবিষ্যতে প্রত্যাশা রয়েছে। বিপিএল ১১তম আসরে এই বিষয়গুলোই হবে মূল আলোচনার বিষয়, যেখানে নতুন রূপে ও নতুন উদ্যমে খেলোয়াড়রা নিজেদের সেরাটা উপস্থাপন করতে চাইবেন।