২০১৫ সালে ইউরোপের দেশ মাল্টার পাসপোর্ট নেওয়ার জন্য প্রায় ১০ কোটি টাকা খরচ করার চেষ্টা করেছিলেন টিউলিপ সিদ্দিকের চাচী শাহীন সিদ্দিক এবং তাঁর চাচাত বোন বুশরা সিদ্দিক। তবে দুর্নীতি অভিযোগের কারণে মাল্টা তাদের পাসপোর্ট প্রদান করেনি। এ বিষয়ে সম্প্রতি একটি প্রতিবেদনে এসব তথ্য প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস।
২০১৩ সালে শাহীন সিদ্দিক প্রথমবারের মতো মাল্টার পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেছিলেন। আবেদনকারী হিসেবে তিনি নিজেকে ঢাকার একটি কোম্পানির চেয়ারম্যান হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, তিনি একটি কোম্পানির নামে কুক্ষিগত করেছেন সরকারি জমি। এই অভিযোগের কারণে তাঁর পাসপোর্ট আবেদন বাতিল করা হয়। এরপর ২০১৫ সালে, শাহীন সিদ্দিক আবারো আবেদন করেন এবং দাবি করেন, তিনি চট্টগ্রামের দ্য আর্ট প্রেস কোম্পানির পরিচালক। তবে এই আবেদনও সফল হয়নি।
২০১৫ সালে পাসপোর্ট পেতে শাহীন সিদ্দিক ও তার মেয়ে বুশরা সিদ্দিককে যথাক্রমে ৬ লাখ ৫০ হাজার ও ২৫ হাজার পাউন্ড খরচ করতে হত। এসব অর্থের সঙ্গে আরো ৭০ হাজার পাউন্ড ফি হিসেবে হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স সংস্থা নিত। আবেদনের অংশ হিসেবে শাহীন কুয়ালালামপুরের একটি ব্যাংকে ২৭ লাখ ৬০ হাজার ৪০৯ ডলার দেখিয়েছিলেন। তবে এসব অর্থের উৎস স্পষ্ট নয়।
বুশরা সিদ্দিক, যিনি ২০১০ সালের পরে লন্ডনে পড়াশোনা করেছিলেন, পরবর্তীতে জেপি মর্গান ব্যাংকে চাকরি করেন, তবে কিছুদিন পরে চাকরি ছেড়ে দেন। ২০১৮ সালে তিনি উত্তর লন্ডনের গোল্ডার্স গ্রিনে ১ দশমিক ৯ মিলিয়ন ইউরো দামে পাঁচ বেডরুমের একটি ফ্ল্যাট কিনেন, যা ধারণা করা হচ্ছে তার বাবা-মা তাকে প্রদান করেছেন।
এদিকে, গত অক্টোবরে বাংলাদেশ ব্যাংক তারিক জামিল সিদ্দিক এবং শাহীন সিদ্দিকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দের নির্দেশ দেয়। এই ঘটনায় বাংলাদেশে তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান জানান, বাংলাদেশের বর্তমান আইন অনুযায়ী, একজন ব্যক্তি বছরে ১২ হাজার ডলার পর্যন্ত বিদেশে পাঠাতে পারেন। তবে শাহীন সিদ্দিকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হওয়া ২৭ লাখ ডলার এই সীমার মধ্যে পড়ে না, যার ফলে এটি সন্দেহের সৃষ্টি করেছে।